কুতুবদিয়ায় নোঙর করলো এমভি আবদুল্লাহ, পাশে সেই জাহান মণি
বাংলাদেশ

কুতুবদিয়ায় নোঙর করলো এমভি আবদুল্লাহ, পাশে সেই জাহান মণি

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এক মাস পর কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় বঙ্গোপসাগরে নোঙর করেছে। সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টায় এটি নোঙর করেছে। আবদুল্লাহ যেখানে নোঙর করেছে তার পাশেই রয়েছে কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণি। এর মধ্য দিয়ে দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার এক মাস পর দেশে পৌঁছালেন ২৩ নাবিক। সেখানে চুনাপাথর খালাস করবে জাহাজটি। খাসাসের পর মঙ্গলবার বিকালে নাবিকদের বন্দরের সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে। 

রাত ৮টার দিকে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন জাহাজের জেনারেল স্টুয়ার্ড নুরউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছেছি আমরা। বিকাল ৫টার দিকে কুতুবদিয়ায় এসেছি। সন্ধ্যা ৬টায় জাহাজটি কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। আমরা সবাই সুস্থ আছি, ভালো আছি।’

কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কুতুবদিয়া উপকূলে এমভি আবদুল্লাহ নোঙর করেছে। সেখানে চুনাপাথর খালাস করবে। সব ঠিক থাকলে মঙ্গলবার বিকালে নাবিকদের বন্দরের সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে আনা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাড়িতে যাবেন তারা।’

এমভি আবদুল্লাহ যেখানে নোঙর করেছে তার পাশেই রয়েছে আমাদের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণি উল্লেখ করে মেহেরুল করিম বলেন, ‘এমভি জাহান মণি থেকে দুই মাইল উত্তরে নোঙর করেছে আবদুল্লাহ। ২০১০ সালে জাহান মণি ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে ১০০ দিনের মাথায় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়িয়ে আনি। জাহান মণি ইন্দোনেশিয়া থেকে সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল নিয়ে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। দুটি জাহাজ পণ্য খাসালের পর কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে।’

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাহাজটি সন্ধ্যা ৬টায় কুতুবদিয়ায় ভিড়লেও নাবিকদের তীরে আনা হবে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায়। তাদের লাইটার জাহাজে আবদুল্লাহ থেকে বন্দরের সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে আনা হবে। কুতুবদিয়ায় নোঙর করার কারণ হলো এত বড় জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর সুযোগ নেই। জাহাজটিতে ৫৬ হাজার ৩৯১ মেট্রিক টন চুনাপাথর রয়েছে। এতে জাহাজটির ড্রাফট (পানির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার, যা চারতলার সমান। ফলে বন্দর জেটিতে এটি ভেড়ানো সম্ভব হবে না।’

জাহাজের ২৩ নাবিক পুরোপুরি সুস্থ আছেন উল্লেখ করে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল ভোররাত ৪টার দিকে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার ৩৯১ মেট্রিক টন চুনাপাথর নিয়ে দেশে রওনা দেয়। আজ দুপুরে বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছে এটি। রাতে পণ্য খালাস শুরু হবে।’

কেএসআরএম সূত্র জানিয়েছে, নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তারা ফুল দিয়ে বরণ করে নেবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এ সময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।

জাহাজটি কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা করে। ১৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

মুক্তিপণের বিনিময়ে দীর্ঘ এক মাস পর গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় মুক্তি পায় জাহাজসহ ২৩ নাবিক। মুক্তির পর জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। ২১ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। জাহাজটিতে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা সেখানে খালাস করা হয়। পরবর্তী সময়ে আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর লোড করা হয়। এসব পণ্য নিয়ে দেশের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

Source link

Related posts

পাচারকালে এক লাখ ইয়াবাসহ মেম্বার প্রার্থী আটক

News Desk

সপরিবার আত্মহত্যার হুমকি আবদুল কাদের মির্জার

News Desk

ঈদে ছুটির দাবিতে মিরপুরে সড়কে পোশাক শ্রমিকরা

News Desk

Leave a Comment