এক সপ্তাহে ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কুমারখালী শাখা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজীবুল ইসলাম খান ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখা লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অগ্রণী ব্যাংক কুমারখালী শাখার ম্যানেজার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী জানান, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন সিনিয়র অফিসার হাসেন আলী।
করোনা উপসর্গ থাকায় গত ২ জুলাই হাসেন আলীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। পর দিন ৩ জুলাই তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর গত ৬ জুলাই ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা প্রিন্সিপাল অফিসার ইমতিয়াজ জামানের করোনা শনাক্ত হয়। পরপর দুজন কর্মকর্তার করোনা শনাক্ত হওয়ায় ব্যাংকের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ওই শাখার আরও তিন জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
শনাক্ত অপর তিনজন হলেন- অফিসার ক্যাশ তরুন হোসেন, মাঠ সহকারী মুস্তাক আহমেদ এবং ঝাড়ুদার নাসিমা খাতুন। আক্রান্তদের পাশাপাশি ব্যাংকের আরো দু’একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীও অসুস্থ, তাদের শরীরে করোনা উপসর্গ রয়েছে। জানা যায়, ব্যাংকের ওই শাখায় ৪ জন আনসার সদস্যসহ মোট ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। শাখার ৫ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে শাখার ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মুনাফা লাভের আশায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে। অগ্রণী ব্যাংকের কুষ্টিয়া জেলার ডিজিএম ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, আমরা চাই না শাখাটি লকডাউন করা হোক। আমরা সীমিত পরিসরে হলেও শাখা চালু রাখার পক্ষে। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কেন কেউই কোনো ঝুঁকি নিতে পারে না। আর আমরা তা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেব না। কুমারখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাচ্ছিল ব্যাংকের শাখাটি সীমিত পরিসরে হলেও চালু রাখতে। কিন্তু ব্যাংক খোলা থাকলে গ্রাহকরা আসবেই। এক্ষেত্রে গ্রাহক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবারই স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। তাই আমরা ব্যাংকের শাখাটি লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।