ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা, ক্ষতি পোষাতে বদ্ধপরিকর শিক্ষকরা
বাংলাদেশ

ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা, ক্ষতি পোষাতে বদ্ধপরিকর শিক্ষকরা

দীর্ঘদিন পর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসতে শুরু করেছে বিদ্যালয়ে। শুরু হয়েছে পাঠদান। যদিও শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কিছুটা কম। তবু বিদ্যালয়ে ফিরতে পেরে খুশি দিনাজপুরের শিক্ষার্থীরা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে তাদের। আবার নতুন কারিকুলাম নিয়েও ভাবছে কেউ কেউ। সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারও পড়াশোনায় পূর্ণ মনোযোগ দেবে বলে আশা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। পড়াশোনার ক্ষতি পোষাতে বদ্ধপরিকর শিক্ষকরা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতন ঘিরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ৬ আগস্ট থেকে খুলতে শুরু করে প্রাথমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ইতোমধ্যে শ্রেণিকক্ষে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। উপস্থিতি কিছুটা কম হলে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। যদিও এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি পাঠদান। উপস্থিতিও কিছুটা কম। 

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয় খুলে দেওয়ায় এবং পাঠদান শুরু হওয়ায় খুশি তারা। তবে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া এবং নতুন কারিকুলাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। তবে পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর শিক্ষকরা। উপস্থিতি ধীরে ধীরে বাড়বে বলে জানালেন তারা। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছেন।

দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া হক স্নেহা বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, দীর্ঘ এক মাস ধরে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। মাঝখানে যে ক্ষতিটা হয়েছিল, তা যেন পূরণ করা হয়। এখনও যে পরিস্থিতি আছে, তা যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়। আমরা যাতে নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারি।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী আরকিয়া জান্নাত জানায়, দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরে ভালো লাগছে। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কবে বিদ্যালয় খুলবে, তা নিয়ে আমরা চিন্তায় ছিলাম। যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন আমাদের পরীক্ষা চলছিল। এখন আর বেশি দিন নেই, পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আবার নতুন কারিকুলাম কেমন হবে, তা নিয়েও চিন্তা আছে। তবে শিক্ষকরা এগুলো সমাধান করে দিলে ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারবো।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈমা ইসলাম রোদেলা জানায়, আন্দোলনের জন্য আমাদের পড়ালেখার ক্ষতি হয়েছে। এখন ভালোভাবে ক্লাস হচ্ছে। সবাই সুন্দরভাবে ক্লাস করতে পারছি।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী শাকিরা খানম শ্রেয়া জানায়, এখনও আমাদের অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছে না। স্কুল বন্ধ ছিল, কোচিংও বন্ধ ছিল। এখন সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। আশা করছি, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুফিয়া খাতুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক দিন পর ক্লাসে ফিরে ভালো লাগছে আমাদের। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। আশা করছি, এই সপ্তাহে সব শিক্ষার্থী ক্লাসে ফিরবে।’

একই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা শামীমা সুলতানা বলেন, ‘অনেক দিন পর আবারও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত। আমরা আনন্দিত। শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করেছে। তাদের যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তা আমরা পুষিয়ে দিতে চেষ্টা করবো। আশা করছি, দুই-একদিনের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। রবিবার ৫০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিতি হয়ে যাবে। অভিভাবকদের অনুরোধ করবো, আপনারা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান। এখানে তারা নিরাপদে থাকবে।’

দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লায়লা হাসিনা বানু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন শিক্ষার্থী উপস্থিতি ৫০ শতাংশ। আশা করি, আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে ফিরবে। এ ছাড়া আমাদের সব শিক্ষক ও স্টাফরা পরিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন।’

Source link

Related posts

পায়ে হেঁটেই ঢাকায় ফিরছে মানুষ

News Desk

ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট বোরো ধান, লোকসানে চাষিরা

News Desk

ধরা পড়ার ভয়ে শিশুটিকে মেরেই ফেললো তারা

News Desk

Leave a Comment