টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার নয় উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দিঘীনালা, মাটিরাঙা, খাগড়াছড়ি সদর, মহালছড়ি ও পানছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পানির স্রোতে ও পাহাড় ধসে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। সেতু ও রাস্তা ভেঙে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। আক্রান্ত লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উঠেছেন।
এদিকে, আবারও বাড়ছে নদী ও পাহাড়ি ছড়ার পানি। বুধবার সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। চেঙ্গী নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বটতলী চাকমাপাড়া, মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, রুইখই চৌধুরীপাড়া, খবং পুড়িয়াসহ নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা দিঘীনালা উপজেলার ১৫-২০টি গ্রামে, পানছড়ি উপজেলার ১৮টি গ্রামে, মাটিরাংগা উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামে, মহালছড়ির ২০ গ্রামসহ পুরো জেলার।
এ ছাড়া মহালছড়ি উপজেলার সঙ্গে মুবাছড়ি ইউনিয়নের সিঙ্গিনালা গ্রামের কাপ্তাইপাড়া এলাকায় একমাত্র সড়কটি ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। টানা বর্ষণ ও বন্যার কারণে মঙ্গলবার ভোররাতে এই সংযোগ সড়কটি ভেঙে যায়।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি খাগড়াছড়ি ইউনিটের সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ জানান, যুব রেড ক্রিসেন্ট খাগড়াছড়ি ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকরা সরকারি ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করছেন। রেড ক্রিসেন্ট সদর দফতরে জরুরি ত্রাণ বরাদ্দের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌরসভায় বন্যা ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই হাজার পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুঁইয়া জানান, প্রায় ১০ হাজার পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন তারা। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিনি বিত্তবানদের দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, বন্যা ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের জন্য খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৮টিসহ পুরো জেলা ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২ আগস্ট জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল।