খাগড়াছড়ির মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি, রঙ-তুলিতে সাজছে দেবী দুর্গা
বাংলাদেশ

খাগড়াছড়ির মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি, রঙ-তুলিতে সাজছে দেবী দুর্গা

এবার খাগড়াছড়ির ৫৪টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। বেশিরভাগ মণ্ডপে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমার গায়ে লাগছে রঙ-তুলির আঁচড়। দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমাশিল্পীদের। কোনও কোনও মণ্ডপে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সাজানো হচ্ছে প্রতিমা। পাশাপাশি এবার আগেভাগেই মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজ সেরেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছে পুলিশ; নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সরেজমিনে জেলা সদরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমার অবয়ব বানানো শেষ। এখন চলছে প্রতিমা ও মণ্ডপগুলোর সাজ-সজ্জার কাজ। রং তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজানো হচ্ছে। একইসঙ্গে রঙ, পোশাক আর গহনা দিয়ে সাজানো হচ্ছে দেবীকে। দুর্গার সঙ্গে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী আর সরস্বতী দেবীকেও। কর্মব্যস্ততায় দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমাশিল্পীদের।

সনাতন পঞ্জিকা মতে, এ বছর ঘোটকে চড়ে দেবী দুর্গার আগমন; বিদায় নেবেনও ঘোটকে। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় দেবীপক্ষ; দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া। সাধারণত শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচ দিন যথাক্রমে মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। ২০ অক্টোবর শুক্রবার শুভ বিল্বষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘দুর্গাপূজার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ততা বাড়ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষের। এবার জেলার ৯ উপজেলার ৫৪টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। দেবী দুর্গার সঙ্গে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী আর সরস্বতীকেও। উৎসবের আমেজ ছোট-বড় সবার মধ্যে। অন্যদিকে ঢাকঢোল, পূজার সামগ্রি এবং পোশাক-আশাকের দোকানিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব পালন করতে পারবো আমরা।’

প্রতিমার গায়ে লাগছে রঙ-তুলির আঁচড়

জেলা সদরের লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের প্রতিমাশিল্পী সুভাষ দাস বলেন, ‘বেশিরভাগ প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সাজানো হচ্ছে প্রতিমা। পূজা শুরুর আগেই এসব কাজ শেষ হয়ে যাবে।’

এবার জেলার সবকটি মণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানালেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নিশ্চিন্তে পূজা উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য পূজা উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে তারা পূজা উদযাপন করবেন বলে আশা কররছি। উৎসব ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে পূজা উদযাপন কমিটি ও জেলা প্রশাসন।’

প্রতিমার অবয়ব বানানো শেষ, এখন চলছে প্রতিমা ও মণ্ডপগুলোর সাজ-সজ্জার কাজ

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হওয়ায় প্রতি বছর মণ্ডপগুলোতে ভিড় করেন অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা। তাই সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আমরা। প্রতিটি মণ্ডপে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আশা করছি, কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।’

দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন এমনটি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই উৎসব সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

Source link

Related posts

বগুড়া-কাহালু সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

News Desk

গ্রামে অনলাইনে খাবার বিক্রি,মাসে আয় ৪০ হাজার টাকা

News Desk

রাজবাড়ী সদরসহ ৩ থানার ওসি রদবদল

News Desk

Leave a Comment