যশোর শহরের বিমানবন্দর সড়কের (আরবপুর) পাশে রাস্তার গা ঘেঁষে শারদোৎসবের একটি গেট নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে চলতে পথে চোখ আটকে যাওয়ার মতো নান্দনিকতা। খুব অল্প খরচে কেবল সাত হাজার পানির বোতল দিয়েই তৈরি করা হয়েছে সেটি। এমন অভিনব গেট তৈরি করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
যশোর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোরাপাড়ায় তৈরি করা হয়েছে এটি। গেটের প্রায় ৫০ গজ দূরে গোরাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দির। রাস্তার দুই পাশজুড়ে এবং ওপরে লাগানো হয়েছে মরিচবাতি। বাড়ির সামনে যতটুকু জায়গা, সবই ঝকঝকে তকতকে।
মন্দিরে দুর্গা, অসুর, গণেশসহ সব প্রতিমার গায়ের রঙে আনা হয়েছে ভিন্নতা। এবার সবুজের আধিক্য বেশি। গোরাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা সব সময়ই নতুন কিছু করার মানসে থাকেন। প্রতিবার পুজোয় যেমন গেট করা হয় নান্দনিকভাবে, তেমনি প্রতিমাগুলোতেও আনা হয় ভিন্নতা।
এবার পানির খালি বোতল দিয়ে গেট তৈরি করার কারণ হিসেবে মন্দির কমিটির সভাপতি ভরত দাস বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই সবার চেয়ে একটু আলাদা কিছু করার চেষ্টা করি। আমরা চাই শুধু যশোর নয়, গোটা দেশে যেভাবে গেট বানানো হয় আমাদেরটা যেন কিছুটা ব্যতিক্রম হয়। সেই ধারণা থেকেই মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপংকর দাস, আমাদের এলাকারই বাসিন্দা সজিব দাস, সাজু দাস আর শিপলু দাস মিলে এবার সিদ্ধান্ত নেয় ভিন্ন কিছু করার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৬ মাস ধরে আমরা সংগ্রহ করি পানির ফ্রেশ (সাদা) বোতল, ক্লেমন (সবুজ) ও স্পিডের (খয়েরি) বোতল। এলাকার ছেলেরা বেশিরভাগ সংগ্রহ করেছে, কিছু আমরা কিনেছি। গেটটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।’
সম্মিলিত চিন্তার ফসল এই গেট দাবি ভরত দাসের। তিনি আরও বলেন, ‘কাজটি প্রায় দুই মাস ধরে করেছেন সজিব দাস, সাজু দাস আর শিপলু দাস।’
কথা হয় সজিব দাসের সঙ্গে। মূলত তিনিই প্রধান কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন। সজিব দাস বলেন, ‘এই গেটে সাত হাজার ২০১ টি খালি বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। যার বেশিরভাগই ফ্রেশ (সাদা)। এ ছাড়া প্রায় ১৫ কেজি পেরেক, তার ১০ কেজি এবং কাঠের বাটাম প্রায় ৩০ সিএফটি ব্যবহার করা হয়েছে।’
শহরের গোরাপাড়ায় ১২০টি পরিবার বসবাস করেন। গেট নির্মাণের খরচ গোরাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দির কমিটিই বহন করেছে বলে জানান সভাপতি ভরত দাস।