খুলনায় ৩৬ স্থানে বাঁধে ভাঙন, লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত লোকালয়
বাংলাদেশ

খুলনায় ৩৬ স্থানে বাঁধে ভাঙন, লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত লোকালয়

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রার ৩৬ স্থানে বাঁধে ভাঙন ধরেছে। লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে বহু এলাকা। ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি। ভেসে গেছে মাছের ঘের।

জানা গেছে, দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী ফকিরকোনা, ঝুলন্তপাড়া এবং পণ্ডিতচন্দ্র স্কুল সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার, কামিনীবাসিয়ায় বাঁধ ভাঙছে। পাইকগাছা উপজেলার লস্কর গ্রাম, বাইনতলা ওয়াপদা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন পোল্ডারে পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রামে লবণাক্ত পানি ঢুকছে। চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গেছে। গড়ইখালীর কুমখালীর ক্ষুদখালী, লস্করের বাইনতলা, লতা, দেলুটি, হরিঢালী, লস্কর রাড়ুলী, কপিলমুনি, সোলাদানার কয়েকটি পয়েন্টে বাঁধ উপচে লোকালয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকছে। সোমবার সকালে এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ রক্ষার কাজ করছেন।

খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হুসাইন খান বলেন, ‘ঝড়ে দাকোপের সাড়ে ১০ হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ১৬ হাজার ৯০৫টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। পানখালী, তিলডাঙ্গা। সুতারখালী এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

খুলনা জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ‘দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা, বটবুনিয়া, কামিনিবাসিয়া, তেতুলতলা, পানখালী, লক্ষ্মীখোলা, গোনা মোল্লাপাড়া, কালিবাড়ি এলাকায় ভাঙন ধরেছে।’

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম তরিক উজ জামান বলেন, ‘কয়রায় এখনও দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। বাইরে বের হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। ঝড়-বৃষ্টি চলছে। দশহালিয়া, নয়ানি এলাকায় ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ বন্ধে তাৎক্ষণিক মেরামত কাজ করা হয়েছে।’

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে পাইকগাছা উপজেলার ৫৬টি ভোটকেন্দ্র আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পাইকগাছা উপজেলায় ওয়াপদা বাঁধের সোলাদানা ইউনিয়নে ৪টি, লাম্বর ইউনিয়নে ২টি, দেলুটি ইউনিয়নে ৮টি, গড়ইখালী ইয়ানিয়নে ২টি, রাছুলী ইউনিয়নে ১টি, হরিঢালী ইউনিয়নে ১টি, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১টি, গদাইপুর ইউনিয়নে ১টি ও পাইকগাছা পৌরসভায় ১টিসহ মোট ২১টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙেছে।

‘প্লাবিত এলাকার মধ্যে রয়েছে সোলাদানা ইউনিয়ন, দেলুটি ইউনিয়ন, রাফুলী ইউনিয়ন, লতা ইউনিয়ন, লস্কর ইউনিয়ন, গড়ইখালী ইউনিয়ন। মানুষ পানিবন্দি রয়েছে সোলাদানা ইউনিয়ন, দেলুটি ইউনিয়ন, রাফুলী ইউনিয়ন, লতা ইউনিয়ন, লঞ্চর ইউনিয়ন, গড়ইখালী ইউনিয়নসহ মোট ৬টি ইউনিয়নে। পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ থেকে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোলাদানা ইউনিয়ন ১১টি পয়েন্ট, দেলুটি ইউনিয়ন, গড়ইখালী ইউনিয়ন ৯টি, কপিলমুনি ইউনিয়ন ২টি, লতা ইউনিয়ন ৩টি, হরিঢালী ইউনিয়নে ১টি পয়েন্টেসহ মোট ৬টি ইউনিয়নর ৩২টি পয়েন্টে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

তিনি আরও জানান,  ঝড়-বাতাস এবং ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উপজেলায় সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। যাতায়াতের রাস্তায় একাধিক স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়েছে এবং অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে গেছে।

 

Source link

Related posts

মোস্ট ওয়ান্টেড ‘বাঘ হাবিব’ গ্রেপ্তার

News Desk

চট্টগ্রামে চলছে না তেলচালিত পরিবহন, দুর্ভোগে যাত্রীরা

News Desk

রংপুর বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণের আভাস

News Desk

Leave a Comment