খুলনা থেকে নিখোঁজ পাঁচ চিকিৎসককে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সংস্থাটির দাবি, তারা মেডিক্যাল ভর্তির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অর্থ লেনদেনে জড়িত। এ ঘটনায় করা মামলায় সিআইডির একটি দল সোমবার (২১ আগস্ট) তাদের গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা।
এর আগে, নিখোঁজ চিকিৎসকদের পারিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সিআইডি পরিচয়ে তাদেরকে বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়।
তারা হলেন- ডা. মো. ইউনুস উজ্জামান খান তারিম (৪০), ডা. লুইস সৌরভ সরকার (৩০), ডা. শর্মিষ্ঠা মণ্ডল (২৬), ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৬) ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা (২৪)।
সিআইডির দাবি, ইউনুস উজ্জামান খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি খুলনার থ্রি ডক্টরস নামে একটি মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টারের মালিক। দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যাল প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তিনি। লুইস সৌরভ খুলনা মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ওই কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন; পাশাপাশি একটি বেসরকারি সংস্থায় চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। মুসতাহিন হাসান, শর্মিষ্ঠা মণ্ডল ও নাজিয়া মেহজাবিন খুলনা মেডিক্যাল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন করেছিলেন মুসতাহিন। তিনি থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। শর্মিষ্ঠা ও নাজিয়া অর্থের বিনিময়ে থ্রি ডক্টরসের ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।
জানা গেছে, ডা. শর্মিষ্ঠা মণ্ডল খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক। মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং ‘থ্রি ডক্টরস’-এর উপদেষ্টা ডা. মো ইউনুস উজ্জামান খান তারিম স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) খুলনা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি ওই হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত। প্রায় দেড় যুগ ধরে তিনি মেডিক্যাল ভর্তি কোচিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্যরা বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) আজাদ রহমান দাবি করেন, খুলনা থেকে গ্রেফতার চিকিৎসকরা মেডিক্যালে ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত। গত ১৩ আগস্ট মেডিক্যাল ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূলহোতা জসিমকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি ডায়েরি জব্দ হয়। সেখানে সারা দেশে মেডিক্যালের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ভিত্তির খুলনার এ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের মধ্যে কেউ সরাসরি প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত। আবার কেউ ফাঁস করা প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন।