প্রতিদিনের মতো আজ ভোরেও সূর্য উঁকি দিয়েছে সাজেকের আঙিনায়। তবে রোদের ঝলমলে আলোয় মেতে ওঠেনি রাঙামাটির এ পর্যটনকেন্দ্রটি। বরং ভোরের আলোয় স্পষ্ট হচ্ছিল শুধুই ধ্বংসস্তূপ আর হতাশার আরেকটি দিন। মাথার গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করেছেন অনেকেই।
সাজেকের রুইলুইপাড়ার ভয়াবহ আগুনে নিঃস্ব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ আগুনে কিছু রক্ষা করতে পারেননি অনেকে। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পরও পানির সংকটে আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি বলছে ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত সাজেকবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা চান স্থানীয়রা
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সাজেকে ভোরের আলো ফোটার পর সোমবারের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হওয়া বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্মৃতিচিহ্ন খুঁজছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। একদিন আগেও যেখানে কটেজ-বসতবাড়ি ছিল সেখানে এখন কেবলই ধ্বংসস্তূপ।
সব হারিয়ে হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন স্থানীয়রা। কেউ থেকেছেন আশপাশের স্বজনদের কাছে। সাজেকে হঠাৎ এমন আগুনে হতভম্ব হয়ে কিছুই রক্ষা করতে পারেননি অনেকে।
স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎ এমন আগুনে কিছুই বের করতে পারিনি। সব হারিয়ে নিঃস্ব আমরা। দোকান-ঘর সব পুড়ে গেছে। সাজেক এখন ধ্বংসস্তূপ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অনিত্য ত্রিপুরা জানান, রাত থেকে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, যাতে এসব মানুষের পাশে দ্রুত সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ায়।
মেঘের ঘর ও স্বর্ণালি রিসোর্টের মালিক জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘দুটি রিসোর্টে আমার প্রায় ২ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।’
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দি বলেন, ‘ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনও পুরোপুরি নেভেনি। পানি না থাকায় কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে। মঙ্গলবার সকালেও থেমে থেমে আগুন দেখা যাচ্ছিল বিভিন্ন দিকে। যা ছড়াচ্ছিল বাতাসে।’
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আগুনে অন্তত ১৪০টি রিসোর্ট-কটেজ, দোকান ও বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন রিসোর্ট-কটেজের মালিক ও ব্যবসায়ীরা। কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন আশপাশের রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পোড়ার পর স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।