Image default
বাংলাদেশ

গদখালির বাগানে ৫ কোটি টাকার ফুল, স্কুল-কলেজ খুললে বিক্রি বেশি

করোনাকালে স্কুল-কলেজ খোলা থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলের রাজধানী গদখালির ফুল চাষিরা। এক সপ্তাহ আগে ফুলের যে দাম পেয়েছেন তারা, চলতি সপ্তাহে তার চেয়ে বেশি দাম পাচ্ছেন। এ কারণে আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।

বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের মন রাঙাতে ফুলের বিকল্প নেই। বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের এক সপ্তাহ পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষাশহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে গোটা জাতি নিবেদন করবে পুষ্পার্ঘ। এসব ফুলের চাহিদা পূরণে মাঝে কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে গোলাপ উৎপাদনে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। কিছু ফুলের ক্ষতিও হয়েছে। কিন্তু চাহিদা বেশি থাকায় গোলাপের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গদখালির বাগানে বর্তমানে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার ফুল রয়েছে। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলে ফুল বিক্রি বেশি হয়। স্কুল-কলেজ খুললে, সবগুলো দিবসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা গেলে করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা।

গদখালি বাজারে গোলাপ ৬-৭ টাকা, জারবেরা ৬-৭ টাকা, রজনীগন্ধা ৫ টাকা, গ্লাডিওলাস ৬-৮ টাকা, জিপসি (প্রতি আঁটি) ২৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ২ টাকা এবং প্রতি হাজার গাঁদা ফুল মিলছে ৪৫০-৫০০ টাকায়।

হাড়িয়া গ্রামের আক্কাস আলী বলেন, হাটে ২০০ পিস গ্লাডিওলাস এনেছিলাম। সিঁদুর, হলুদ আর খয়েরি-হলুদ রঙের। রঙভেদে ৬ থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে কিছু এনেছিলাম। তখন কম দাম পেয়েছিলাম। এই সপ্তাহে দাম বেশি ফুলের।

নিমতলা এলাকার বিল্লাল হোসেন জানান, গত বছর করোনার কারণে ১৪ টাকার ফুল ৪ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। অনেক ফুল কেটে গরু-ছাগল দিয়ে খাওয়াতে হয়েছে। গত সপ্তাহেও একই রকম অবস্থা ছিল। এই সপ্তাহে হাটে একটু দাম পাওয়া যাচ্ছে। সরকার যদি স্কুল-কলেজ খুলে দেয়, তাহলে ফুলের দাম পাওয়া যাবে। কেননা আমাদের এই ফুলের ক্রেতা সাধারণত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশি।

গদখালির বাগানে ৫ কোটি টাকার ফুল, স্কুল-কলেজ খুললে বিক্রি বেশি মধুখালি এলাকার আরমান হোসেন হাটে নিয়ে এসেছেন গাঁদা ফুল। তিনি বলেন, ১০ দিন আগে ৬ হাজার ফুল এনেছিলাম; কিন্তু সব বিক্রি করে টাকা পেয়েছিলাম ৪০০। আজও হাটে এনেছি ১০ হাজারের মতো ফুল। আজকে হাজার প্রতি দাম পাচ্ছি সাড়ে ৪০০ টাকা। আগের তুলনায় বেশিই বলা যায়। এমন থাকলে ভালোবাসা দিবসে দাম আরেকটু বেশি পাওয়ার আশা করছি।

হাড়িয়া গ্রামের ফুল চাষি আব্দুল বারিক বলেন, গত বছর লকডাউন থাকায় আমার ক্ষতির পরিমাণ ছিল শতকরা ৮০ ভাগ। এবার গ্লাডিওলাস আর গোলাপ একটু বেশি দামে বিক্রি করতে পেরেছি। মাঘের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় কিছু ফুলের ক্ষতি হয়েছে; কিন্তু এখনও যা আছে, দাম পেলে ক্ষতি খানিকটা পুষিয়ে নিতে পারবো।

 উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ও পানিসারাসহ ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৬২৫ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কৃষক। এরমধ্যে ২৭২ হেক্টর জমিতে গ্লাডিওলাস, ১৬৫ হেক্টর জমিতে রজনীগন্ধা, ১০৫ হেক্টর জমিতে গোলাপ, ৫৫ হেক্টরে গাঁদা, ২২ হেক্টরে জারবেরা আর ৬ হেক্টর জমিতে রথস্টিক চাষ হচ্ছে। এসব জমিতে প্রায় ৯৮ হাজার শ্রমিক কাজ করেন, উৎপাদিত ফুল বিক্রি হবে প্রায় ২৯ কোটি টাকার।
 

Source link

Related posts

ঢাবিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘আষাঢ় পার্বণ’

News Desk

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ২৩ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

News Desk

করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা

News Desk

Leave a Comment