বেতন বাড়ানোর দাবিতে সপ্তম দিনের মতো গাজীপুর চলছে শ্রমিকদের বিক্ষোভ। বিক্ষোভ চলাকালে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুর করেছে, টায়ার জ্বালিয়ে একটি পিকআপে আগুন দেয়।
গত সোমবার থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন শুরু হয়। দিন যতই যাচ্ছে শ্রমিকরা ততই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। শ্রমিকদের এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। পরে তারা বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর চালালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বেলা ১১টার দিকে মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। স্ট্যান্ডার্ড কারখানা ও কোনাবাড়ি বিসিকের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেয়। তারা দলবদ্ধ হয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পরে পুলিশ ও র্যাব এসে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুই প্লাটুন বিজিবি ঘটনাস্থলে আসে।
এদিকে, একইদিন দুপুর থেকে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। তারা একটি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশের সঙ্গে থেমে থেমে চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। একই অবস্থা মহানগরীর ভোগরা ও রওশন সড়ক এলাকার কারখানার শ্রমিকদেরও।
স্ট্যান্ডার্ড কারখানার শ্রমিক জুয়েল মিয়া বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। আমাদের সঙ্গে কেউ কোনও আলোচনা করেনি। আমাদের বেতন সর্বনিম্ন ২৩ হাজার টাকা এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘আজকেও শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। তারা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। পরে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মঈনুল হক জানান, শ্রমিকরা আন্দোলন করে মহাসড়ক অবরোধ করে। উত্তেজিত শ্রমিকেরা মহাসড়কে ভাঙচুর ও ইটপাটকেল ছুড়লে আমরা তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।