নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীতে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৭৪ জন নিখোঁজের তালিকা তৈরি করেছে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৭৪ জন নিখোঁজের তালিকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (ঢাকা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘যারা দাবি করছেন যে তাদের পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ রয়েছেন, যারা গতরাতে লুটপাটের সময় এই কারখানায় এসেছিলেন। আমরা তাদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছি। এই মুহূর্তে তা যাচাই-বাছাইয়ের কোনও সুযোগ নেই। স্বজনরা যারা দাবি করছেন তাদের নাম, ঠিকানা লিখে রাখছি। এখন পর্যন্ত এ তালিকায় ১৭৪ জনের নাম লেখা হয়েছে। তবে তারা কেউ কারখানার শ্রমিক নন বলে জেনেছি আমরা।’
নিখোঁজদের কয়েকজন স্বজন জানিয়েছেন, রবিবার রাতে গাজী টায়ারসে লুটপাট চলাকালীন তাদের নিখোঁজ সদস্যরা কারখানাটির ভেতরে ছিলেন। রাতভর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। মোবাইল বন্ধ আছে তাদের।
এদিকে, সোমবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কারখানাটিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটকে কাজ করতে দেখা গেছে। এর আগে রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় আগুন লাগে।
নিখোঁজ ছেলে সজীবকে খুঁজতে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না। গতকাল এখানে এসেছিল। রাত থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছি। কোনও ধরনের যোগাযোগ করতে পারছি না।’ তার মতো আরও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে নিখোঁজ স্বজনদের নাম তালিকায় লেখাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেফতারের পর কারখানাটিতে লুটপাট শুরু করে দুর্বৃত্তরা। রাতে আগুন লাগার সময়ও লুট করতে গিয়ে অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তাদের উদ্ধার করেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘রাতে গাজী টায়ার কারখানায় আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা কাজ শুরু করি। কারখানার কাঁচামাল রাবার প্লাস্টিক হওয়ায় আগুন ফ্যাক্টরির চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। এখান থেকে ১৪ জনকে উদ্ধার করতে পেরেছি। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কেউ এই কারখানার শ্রমিক বা কর্মচারী নয়। তারা খুব সম্ভবত এখানকার মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য এসেছিলেন।’