দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। আর কয়েকদিন বাদেই টানা একমাসের সিয়াম সাধনা শেষে ঈদ আনন্দে মেতে উঠবেন গোটা মুসলিম উম্মাহ। তবে ঈদ আনন্দের ছিটেফোঁটাও যেন নেই এতিমখানার শিশু শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ইবনে সাফির জীবনে।
বলছি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের গোবিন্দগুনিয়া দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসা এতিমখানায় অধ্যয়নরত নুরানি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ইবনে সাফির কথা। মিরপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের দিনমজুর মজিবর সর্দারের ছেলে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আব্দুল্লাহ। তার বাবা-মা যেন থেকেও নেই। প্রায় ছয় মাস আগে স্থানীয় গোবিব্দগুনিয়ার দারুল উলুম মাদ্রাসায় এসে আব্দুল্লাহকে দিয়ে যান তার মা। এরপর ছয় মাসে আর একদিন সন্তানের খোঁজ নিতে আসেননি তারা। বর্তমানে এই মাদ্রাসায় তার বাসস্থান।
সরেজমিনে মাদ্রাসাটিতে গেলে দেখা গেছে, ১১ বছর বয়সী আব্দুল্লাহর রোগাপাতলা শরীর। পরনের যেই পুরনো জুব্বাটি, সেটিও শেষ কবে পরিষ্কার করেছে এটি মনে নেই। পুরনো ময়লা এই জুব্বাটিও সহপাঠীর দেওয়া। মাথায় পুরনো একটা টুপি আর পরনের প্যান্টটাও দিয়েছেন একজন। শরীর ভর্তি চর্মরোগে আক্রান্ত। প্রয়োজন চিকিৎসার। কিন্তু কে নেবে অসহায় শিশু আব্দুল্লাহর দায়িত্ব?
স্থানীয় গোবিন্দগুনিয়া দারুল উলুম কওমিয়া মাদ্রাসা এতিমখানার পরিচালক মাওলানা শিহাবুল হক সিরাজী বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে শিশু আব্দুল্লাহর মা একদিন মাদ্রাসায় এসে তার সন্তানকে রেখে দিতে বলেন। কিন্তু প্রথমে তাকে মাদ্রাসায় রাখতে অস্বীকৃতি জানালে তার মা কান্নাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে মাদ্রাসাতে ভর্তি করে নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত মাদ্রাসায় তার খরচ বহন করছে।
তিনি আরও বলেন, তার নিজস্ব কোনও পোশাক নেই। গায়ে দেওয়া জুব্বাটিও এক শিক্ষার্থী দিয়েছেন। এমনকি তার পরনের প্যান্ট ও মাথার টুপিটাও একজন দিয়েছেন। আর কয়েকদিন বাদে ঈদ, তবে এখনও তার কোনও নতুন পোশাক জোটেনি।