বরিশালের সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভাঙার পর নগরের আগরপুর রোডে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও চৌমাথা এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম পার্ক গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নগরের আগরপুর রোডে বরিশাল প্রেসক্লাবের সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে ম্যুরালটি ভেঙে নগরে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে স্থানীয়দের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। এ সময় স্থানীয় উৎসুক জনতা ছাত্রদের সমর্থন দেন।
একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বরিশাল-ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক দখল করে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহানারা বেগম পার্ক বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। ভাঙচুরের সঙ্গে চলে স্লোগান। বুলডোজারের পাশাপাশি শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে পার্কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে ফেলেন তারা।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে মহাসড়কের একটি বাইলেন ও অন্য দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন জমি দখল করে পার্ক করেন সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। মৃত মায়ের নাম অনুসারে এটির নামকরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম পার্ক। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়।
জাতীয় মহাসড়কের ওপরে নির্মিত পার্কটি অপসারণ হওয়ায় আনন্দিত সংশ্লিষ্টরা। পার্ক নির্মাণের পর থেকে এটি অপসারণে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীরা এটি অপসারণের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সাহেদ।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় মহাসড়ক দখল করে পার্কটি নির্মাণ করায় যানবাহনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চলাচলেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। এটির কারণে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে পার্কটি অপসারণ করেছি আমরা।’
এর আগে বুধবার রাত থেকে বুলডোজার দিয়ে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। বুধবার রাত ১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কালীবাড়ি রোডে সাদিকের বাসভবনের সামনে ভিড় জমান। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একটি বুলডোজার নিয়ে এলেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে তারা বুলডোজার ব্যবহার করতে পারেননি। এর আধা ঘণ্টা পর বুলডোজার দিয়ে সাদিকের বাসভবন ভাঙা শুরু হয়। রাত দেড়টার দিকে বাসভবন ঘিরে ভাঙচুরের একপর্যায়ে বুলডোজার দিয়ে বাড়ির নিচতলার একাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বাড়ি ভাঙা হয়।