Image default
বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ যেন কমছেই না

গোপালগঞ্জে ডায়রিয়া প্রকোপ কমছেই না। নোংরা পরিবেশে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপতালে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীদের বাইরে থেকে আইভি স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। প্রচন্ড তাপপ্রবাহ, অনাবৃষ্টি ও পানিতে লবনাক্ততার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমছেনা বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অসিত কুমার মল্লিক।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত ১০ এপ্রিল থেকেগোপালগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী এ হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৩ টি সিট রয়েছে। সিট সংকটে রোগীরা বারান্দা, মেঝ ও বাইরে আশ্রয় নিয়েছে। হাসপাতাল ওয়ার্ডটি অনেক পুরনো ও জড়াজীর্ণ। এ কারণে ওয়ার্ডটি একটু নোংরা মনে হচ্ছে। আসলে নোংরা নয়। দ্রুত এটি ভেঙ্গে নতুন ভবন করা হবে। তিনি বলেন হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের সংকট রয়েছে। তাই রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। আইভি স্যালাইন ছাড়া ডায়রিয়া চিকিৎসার সব ঔষুধ হাসপাতাল থেকে রোগীদের দেয়া হচ্ছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। তারপরও ডায়রিয়া রোগীরা সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরছেন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভোজেরগাতী গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, আমাকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে রাখা হয়েছে। এখানে নোংরা পরিবেশ। ড্রেনের পাশে রেখে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখানে ভর্তি হয়ে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নার্স ও চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন আন্তরিক ভাবে। কিন্তু এখানে মুখে খাওয়া স্যালাইন ছাড়া আর কিছুই দেয়া হচ্ছেনা। আমাদের বাইরে থেকে আইভি স্যালাইন সহ সব ওষুধ কিনতে হচ্ছে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি গ্রামের রাশিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বুধবার ভর্তি হয়েছি। হাসপাতাল থেকে কোন ঔষুধ দেয়নি। ডাক্তার কাগজে ঔষুধ লিখে দিয়েছেন। বাইরে থেকে সব ঔষুধ কিনেছি। এখনো নার্স চিকিৎসা শুরু করেন নি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদাহ গ্রামের বাবুল হোসেন বলেন, প্রচন্ড গরমের মধ্যে এখানে বৃষ্টির দেখা নেই। সেই সাথে মধুমতির নদীর পানি লবনাক্ত হয়ে পড়েছে। এপানি পান ও রান্না বান্না সহ সকল কাজে ব্যবহার করছি। এ কারণে আমাদের গ্রামে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া চলছে। আমি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখানে চিকিৎসা ভাল। কিন্তু ঔষুধ নেই। এছাড়া ডায়রিয়া ওয়ার্ডের পরিবেশ খুবই নাজুক। এ দিকে একটু নজর দিতে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।

গোপালগঞ্জে সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, মধুমতি নদীর পানি লবনাক্ত হওয়ায় গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। কাশিয়ানী, মুকসুদপুর ও কোটালীপাড়া উপজেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ নেই। মাঝে গোপালগঞ্জে ডায়রিয়া কিছুটা কমেছিলো। তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। লবন পানি মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। এ পানি পান করলে ডায়রিয়া, আমাশয়, ক্ষুধামন্দা, উচ্চরক্তচাপ, চর্মরোগ সহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। লবন পানি পান বন্ধ করতে হবে। তাই তিনি ডায়রিয়া প্রতিরোধে পুকুর ও ডিপ টিউবওয়েলের পানি ফুঁটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছেন।

Related posts

‘সাংগ্রাই জলোৎসব’ যেন পাহাড়ে এক মিলন মেলা

News Desk

মাটিরাঙ্গার ইউএনওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

News Desk

নির্মাণ শেষের আগেই ভেঙে পড়ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার সেতু

News Desk

Leave a Comment