করোনার কারণে মাত্র এক হাজার দশ টাকা পরিশোধ না করায় নুরুন্নাহার বেগম নামের এক নারীকে মামলায় জড়িয়ে জেলখাটিয়ে বহুকাল আগের কাবুলিওয়ালাদের ভূমিকা পালন করেছে একটি মাল্টিপারপাস সোসাইটি।
ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের। এ ঘটনায় এলাকাবাসির মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন নাগরিকরা ওই মাল্টিপারপাসের লাইসেন্স বাতিলপূর্বক অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জামিনে বের হয়ে আজ শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের দিনমজুর সেলিম হাওলাদারের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৯ সালে বাটাজোর বন্দরের বেসরকারি পপুলার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে তিনি ৩০ হাজার টাকার ঋণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে নিয়মানুযায়ী তিনি প্রতি সপ্তাহে নয়শ’ টাকা হারে কিস্তি এবং সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করে আসছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি কিস্তি এবং সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়েছেন। এতে মাল্টিপারপাসের অনুকূলে নুরুন্নাহারের ২০ হাজার নয়শ’ টাকা পরিশোধ করা হয় এবং সঞ্চয় বাবদ আট হাজার ৯০ টাকা জমা দিয়েছেন। এরইমধ্যে দেশে করোনা ভাইরাস শুরু হলে ওই মাল্টিপারপাসের অফিস বন্ধ থাকায় নুরুন্নাহার কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে মাল্টিপারপাস সোসাইটি তার (নুরুন্নাহার) কাছে এক হাজার দশ টাকা পাওনা থাকে।
নুরুন্নাহার বেগম আরও বলেন, গত তিনদিন পূর্বে গৌরনদী মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বাসুদেবপাড়া কালীবাড়ি বাজারে গিয়ে তাকে (নুরুন্নাহার) খোঁজাখুজি করেন। বুধবার (১৯ মে) বেলা এগারোটার দিকে তিনি (নুরুন্নাহার) ওই এসআই’র সাথে দেখা করতে থানায় আসেন। এসময় তিনি জানতে পারেন পপুলার মাল্টিপারপাস সোসাইটির দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করে বলেন, ওই মাল্টিপারপাস সোসাইটি ঋণ পরিশোধের জন্য কোন প্রকার নোটিশ কিংবা সুযোগ না দিয়েই আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ফলে আট মাসের দুগ্ধজাত সন্তান রেখে আমাকে দুইদিন কারাভোগ করতে হয়েছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
গৌরনদী মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালে পিরোজপুর আদালতে দায়ের করা মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে আদালতে প্রেরন করা হয়। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, করোনাকালীন সময়ে ওই মাল্টিপারপাস সোসাইটি কর্তৃপক্ষের সহনশীল হওয়া উচিত ছিলো। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে পপুলার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির বাটাজোর অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ফলে কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ইউপি সদস্য ক্ষিতিস চন্দ্র বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পাল্টিপারপাসের অফিসটি বন্ধ রয়েছে