চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রীর কাছে এলাকাবাসীর যত প্রত্যাশা
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রীর কাছে এলাকাবাসীর যত প্রত্যাশা

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন চট্টগ্রামের দুই সংসদ সদস্য। তারা হলেন—চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালী) আসন থেকে নির্বাচিত ড. হাছান মাহমুদ ও চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আগের সরকারের মেয়াদে হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী ও মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষা উপমন্ত্রী ছিলেন। এবার হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। দুই জনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় নিজ এলাকার লোকজন এবং নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। খুশিতে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে দুই মন্ত্রীর কাছে নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীর মানুষজনের প্রত্যাশা, গত মেয়াদে তথ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এলাকার বহু মানুষকে চাকরি দিয়েছেন হাছান মাহমুদ। এলাকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সামনের দিনে এলাকায় উন্নয়নকাজ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নতুন রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্ট নির্মাণ ও নদীভাঙনকবলিত এলাকার স্থায়ী সমাধানে পদক্ষেপ নেবেন। সেইসঙ্গে রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে শিল্পকারখানা গড়ে তুলে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন।

প্রত্যাশার কথা জানিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বদিউল খায়ের লিটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ার মাটি ও মানুষের নেতা হাছান মাহমুদ। তাকে পুনরায় মন্ত্রী করায় রাঙ্গুনিয়াবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ২০০৮ সালের পর হাছান মাহমুদের হাত ধরে রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আশা রাখছি, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতে শিল্পকারখানা গড়ে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন তিনি।’ 

হাছান মাহমুদকে পুনরায় মন্ত্রী করায় রাঙ্গুনিয়াবাসী আনন্দিত উল্লেখ করে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হাছান মাহমুদের হাত ধরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাস্তাঘাটের উন্নয়নে বিপ্লব ঘটেছে। নদীভাঙন রোধে বসানো হয়েছে ব্লক। অসংখ্য আশ্রয়হীন মানুষ পেয়েছেন সরকারি ঘর। এবার আমাদের দাবি, চন্দ্রঘোণা এলাকায় কর্ণফুলী নদীর ওপর যাতে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণ হলে মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। পাশাপাশি উপজেলায় যাতে নতুন শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হয়। এতে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটাই মন্ত্রীর কাছে আমার চাওয়া।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে চন্দ্রঘোণা এলাকার আবু তৈয়ব খান বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর কিছু এলাকায় এখনও ব্লক বসানোর কাজ বাকি আছে। আগামীতে মানুষের ঘরবাড়ি নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য ব্লক বসানোর কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি। এই উপজেলার মানুষের বড় সমস্যা চন্দ্রঘোণা এলাকায় কর্ণফুলী নদীর ওপর ফেরি দিয়ে যাতায়াত। কর্ণফুলী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের কষ্ট দূর হবে। একইসঙ্গে মন্ত্রীর কাছে এলাকার নতুন রাস্তাঘাটের আরও উন্নয়নের দাবি রইলো।’ 

এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর কাছে সাধারণ মানুষের দাবি ও প্রত্যাশা আরও বেশি। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি বিনোদনকেন্দ্র, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, খেলাধুলার মাঠ, আবাসন সমস্যা সমাধানসহ এলাকার আরও উন্নয়ন চান কোতোয়ালি এবং বাকলিয়ার মানুষজন।

কোতোয়ালির আওতাভুক্ত ষোলশহর এলাকার বাসিন্দা মোরশেদ তালুকদার বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে দুজন মন্ত্রী হয়েছেন। এর মধ্যে একজন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার অপরজন নগরীর। দুই মন্ত্রীকে মিলে চট্টগ্রামকে ঢেলে সাজাতে হবে। খেলাধুলার মাঠের সংকট আছে, বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত পার্ক নেই, আবাসন সমস্যা আছে। শিল্পকারখানা থাকলেও কর্মসংস্থান তেমন নেই। শিক্ষামন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধান করবেন, এটাই চাওয়া।’

নগরীর সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা উল্লেখ করে মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে টেকসই পদক্ষেপ, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে মেট্রোরেল চালুর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও প্রযুক্তিনির্ভর করার দাবি জানাই।’

একই এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নগরীতে অনেক বছর ধরে নতুন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। অথচ প্রতি বছর ছাত্রছাত্রী বাড়ছে। সে অনুযায়ী সরকারি স্কুল-কলেজ সংকট আছে। একইভাবে সংকট আছে সরকারি হাসপাতালের। এখানে আধুনিক হাসপাতাল করার দাবি রইলো দুই মন্ত্রীর কাছে।’ 

কোতোয়ালি থানা এলাকার কলেজশিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কাগুজে বইয়ের সঙ্গে প্রযুক্তি যুক্ত হয়ে সমগ্র বিশ্বে শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব বিপ্লব হয়েছে। পুঁথিগত বিদ্যার পরিবর্তে এখন কর্মমুখী তথা প্রযুক্তিনির্ভর অর্থাৎ কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোনও দেশকে প্রযুক্তিনির্ভর কারিগরি শিক্ষা ছাড়া সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই আশা করছি, নতুন শিক্ষামন্ত্রী আইটি সেক্টরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে তরুণদের কল্যাণে আইটি সেক্টরের যাতে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারে নতুন শিক্ষামন্ত্রী পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।’

Source link

Related posts

বাজেটে মেগাপ্রকল্পেই বেশি নজর সরকারের

News Desk

চারের মধ্যে ২ লেনই দখলে, যানজটে ভোগান্তি

News Desk

ঢাকা-গাজীপুর রুটে বিশেষ ট্রেন চলবে রবিবার থেকে

News Desk

Leave a Comment