চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল চিকিৎসক- কর্মচারীরা। বিনা নোটিশে বেতন কাটার প্রতিবাদসহ ১৬ দফা দাবিতে সোমবার (৪ এপ্রিল) হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করা হয়। এ সময় দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। পরে হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির কর্তা ব্যক্তিরা দুপুর ১২টার পর আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে সবাই কাজে ফিরেন।
ওমর ফারুক নামে আন্দোলনরত মা ও শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, বিনা নোটিশে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন কেটে নেওয়া হয়। সপ্তাহে ৬০-৬৬ ঘণ্টা কাজ করি আমরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুয়ায়ী ৪৮ ঘণ্টা চাকরির সময়। এখানে বেশি সময় দেওয়ার পরেও বেতন কাটা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপালের জরুরি সেবা ছাড়া অন্য সব সেবা বন্ধ ছিল। দাবি মানার আশ্বাসে আমরা কাজে ফিরেছি।
এদিকে আন্দোলনকারীদের ১৬ দফা দাবির মধ্যে আছে- প্রতি সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি করানো হলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য ওভারটাইম কাউন্ট করে পেমেন্ট করতে হবে, বিধিমালায় কাজ শুরুর সময় সাড়ে আটটা করা, শুক্রবার এবং সরকারি বন্ধ দিনের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করা, সিএল নিলে ডিউটি রিপ্লেসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, বৈশাখী ভাতা দেওয়াসহ ১৬ দফা দাবি রয়েছে।
মরিয়ম বেগম নামে এক নার্স জানান, বিনা নোটিশে বেতন কাটার প্রতিবাদে আমরা এ কর্মবিরতি পালন করেছি। একই দাবিতে ডাক্তার, নার্সদের সঙ্গে কর্মবিরতি পালন করেছে হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ড বয়, গার্ডসহ সব শ্রেণির কর্মীরা।
এদিকে কর্মবিরতির কারনে রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। অনেক রোগী অন্য হাসপাতালে চলে গেছেনে।
কাশবি আক্তার নামে এক নারী জানান, সকাল ৮টায় তার এক বছর বয়সী অসুস্থ ছেলে আনাস উদ্দিন সোয়াতকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। পরে চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিলে আউটডোরে রোগী দেখা শুরু হয়। তার ছেলেকে দেখানোর পর হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্য ডা. ফজলুর রহমান বাবুল জানান, আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা কাজে ফিরেছেন। এখন হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।