আর একদিন পরই ঈদুল আজহা। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তবে চট্টগ্রাম থেকে ঘুরমুখো মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। শুক্রবার (৮ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সবগুলো ট্রেনে ছিল অতিরিক্ত যাত্রী। ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। সময়মতো স্টেশন ছেড়ে যেতে পারেনি অনেক ট্রেন।
এদিকে নগরীর দামপাড়া স্টেশন, সাগরিকা ও অক্সিজেনমোড়সহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত একাধিক বাস সার্ভিস থাকলেও কুষ্টিয়া, যশোর ও বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার সঙ্গে চলাচল করে অল্প সংখ্যক বাস। ট্রেন-বাস না পেয়ে অনেক যাত্রী ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ভাড়া করে গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন।
হানিফ পরিবহনের দামপাড়া স্টেশন কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা নুরুল আজিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ে যত বেশি যাত্রী হয় উত্তরবঙ্গে তত যাত্রী নেই। এ কারণে সকালে ও রাতে চট্টগ্রাম থেকে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর পর্যন্ত দুটি বাস চালু আছে। ঈদে যাত্রী বেশি হলেও সার্ভিস বাড়ানো সম্ভব হয় না।’
নগরীতে ট্রেন ও বাসের জন্য স্টেশনগুলাতে অপেক্ষা করছে অনেক যাত্রী। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে যারা গ্রামে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করতে যাচ্ছেন, তাদেরকে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
আসলাম উদ্দিন নামে ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর ষোলশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। চাকরি করেন একটি কারখানায়। ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায় যাচ্ছেন। স্বাভাবিক সময়ে রাস্তার মাথা থেকে রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোণা পর্যন্ত অটোরিকশা ভাড়া ২৫০ টাকা। এখন ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা দাবি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গেছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস। তবে ৭টা ২০ মিনিটে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা থাকলেও ২০ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। ৭টা ৪০ মিনিটে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় ৩০ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। সাড়ে ৮টায় চট্টলা এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল, সেটাও ২০ মিনিট দেড়িতে ছেড়েছে। বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশন থেকে ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সবগুরো ট্রেন ছেড়ে গেছে। তবে কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে ছেড়েছে। আজ অনেক যাত্রী। এত যাত্রীকে দেওয়ার টিকিট নেই।’
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের চিফ ইন্সপেক্টর সালামত উল্লাহ বলেন, ‘বিজয় এক্সপ্রেস, চট্টলা ও সাগড়িকা এক্সপ্রেসে যাত্রীর প্রচুর ভিড় ছিল। অনেক যাত্রী ছাদে উঠে পড়েন। দুর্ঘটনা ঠেকাতে তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।’