পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে কঠোর বিধি-নিষেধের চতুর্থ দিনেও ফেরিতে ছোট যানবাহন ও যাত্রীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঘাট পার হয়ে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় ছিল চোখের পড়ার মতো।
ভোর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়ে ফেরিতে মানুষ ও ছোট যানবাহন পার হচ্ছে গাদাগাদি করে। ঘাট এলাকায় আসতে পারলেই বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ট্রাকের পাশাপাশি মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার পার করছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। ঘাট এলাকাতেও মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, আটোসহ নানা ধরনের যানবাহনে ভরপুর রয়েছে। নেওয়া হচ্ছে ১০গুণ বেশি ভাড়া।
আরিফ নামে এক যুবক চাকরি করেন রাজধানীর একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে। ঈদের আগে জানতেন বন্ধ তার কোম্পানি। তারপর গ্রামের বাড়িতে যান তিনি। কিন্তু গতকাল তাকে জানানো হয়েছে কোম্পানি খুলবে। না আসলে চাকরি হারাতে হবে। এ কারণে কষ্ট করে ঢাকায় ফেরা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ছকিনা আক্তার যাচ্ছেন গাজীপুরে। পথে পথে হয়রানি আর হেঁটে ঘাটে আসেন দৌলতদিয়ায়। তারপর ফেরি চন্দ্র মল্লিকাতে গাদাগাদি করে পার হন তিনি।
এ নারী আরও জানান, ১০টাকার ভাড়া দিতে হয়েছে ১০০ টাকা করে। না গেলে হারাতে হবে চাকরি। কাজ হারানোর ভয়ে ফিরতে হচ্ছে, এখন কী করব? কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই ঢাকার দিকে মানুষের ঢল নেমেছে কারণ একটাই কাজ হারানো ভয়ে তারা ছুটছেন রাজধানীসহ আশপাশের শহরগুলোর দিকে। গাজীপুরে যাওয়ার জন্য যুদ্ধ করছেন এরকম অনেক নারী। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক সালাম মিয়া জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ৯টি ফেরি চলাচল করছে। জরুরি পরিবহনের গাড়ি ছাড়াও ছোট ছোট যাবাহনও ফেরি পার হচ্ছে।
দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে সাড়ে ৯টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১০৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবুও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে।
ঈদ উপলক্ষে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হয়। যা শেষ হয় বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই)। শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে আবারও শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত।