চালুর অপেক্ষায় খুলনা-ঢাকা নতুন রেলপথ
বাংলাদেশ

চালুর অপেক্ষায় খুলনা-ঢাকা নতুন রেলপথ

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রস্তাবনা অনুযায়ী খুলনা-ঢাকা এবং বেনাপোল-ঢাকা নতুন রুটে ট্রেন চালুর তৎপরতা চলছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর ট্রেন চালুর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, কিন্তু কবে থেকে ট্রেন চলবে তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটের ট্রেন খুলনা থেকে যশোরের সিঙ্গিয়া, নড়াইল, মধুমতি সেতু, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে। ঢাকা থেকে ফিরতি ট্রেন যশোর হয়ে বেনাপোল যাবে দুপুরে। বেনাপোল থেকে একই রুটে ঢাকায় ফিরবে। এরপর ঢাকা থেকে নড়াইল হয়ে বিকালে খুলনা ফিরবে। খুলনা-ঢাকা পুরনো রেল রুটের পথ ৩৭৬ কিলোমিটার। খুলনা-ঢাকা নতুন রুটের পথ ২০৮ কিলোমিটার। এই পথে কমবে ১৬৮ কিলোমিটার। নতুন এ পথে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। আলোচনায় রয়েছে খুলনা থেকে ঢাকা রুটে ৩-৪টি ট্রেন চালানোর বিষয়। বেনাপোল থেকেও ট্রেন ঢাকায় নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ ছাড়া একটি ট্রেন দিয়ে আগে রুট চালু করা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। যা খুলনা থেকে ছেড়ে ঢাকা হয়ে বেনাপোল, আবার বেনাপোল-ঢাকা হয়ে ট্রেনটি খুলনা রুটেও চালানোর বিষয় ভাবনায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আংশিক খুলে দেওয়া হয়। তখন ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হয়। এবার ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার যোগ হচ্ছে। এর ফলে ঢাকা থেকে যশোরের ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথে সরাসরি যোগাযোগ চালু হতে যাচ্ছে। গত জুলাই মাসে এ ট্রেনলাইন চালু এবং ১ নভেম্বর বাণিজ্যিক ট্রেন চালুর কথা শোনা গিয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। এরপর ১৫ নভেম্বর চালু হবে শোনা যায়। পরে শোনা যায় ১ ডিসেম্বর বা ২ ডিসেম্বর এ লাইনে খুলনা ও বেনাপোল পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে। কিন্তু ট্রেন চালু করার বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত ঘোষণা পাননি খুলনা স্টেশন মাস্টার।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার (পাকশি) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আলোচনা চলছে অনেক বিষয় নিয়েই। কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি এখনও। পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-ঢাকা, বেনাপোল-ঢাকা নতুন রুটে ট্রেন চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এখনও দিনক্ষণ বা কয়টা ট্রেন কোন সময়ে চলবে এ সব বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।’ 

পদ্মা রেল লিংকের দ্বিতীয় ফেজের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে ২৪ নভেম্বর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে নতুন রুটের পরীক্ষামূলক রেল চলাচল। ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে খুলনা পৌঁছায়। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ১২টি বগি নিয়ে ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে রওনা দিয়ে পৌঁছায় দুপুর ১টা ১০ মিনিটে। তবে নতুন রুট চালু হলেও সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসের পুরনো রুটের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না বলেই জানা গেছে। আগের রুটেই এ দুটি ট্রেন চলবে।

রেলওয়ের খুলনা ট্রাফিক পরিদর্শক হংশুমান রায় তপু জানান, পদ্মা সেতু হয়ে নতুন নতুন রুটে ট্রেন চলাচল শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। নতুন জনবল এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে অন্য সেটআপের জনবল দিয়ে আপাতত ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। প্রতিদিন খুলনা থেকে যশোরের সিঙ্গিয়া, নড়াইল, মধুমতি সেতু, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ভাঙা হয়ে ঢাকা আসা যাওয়া করতে পারবে ট্রেন।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. মামুনুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে খুলনা থেকে ঢাকা এবং বেনাপোল-ঢাকা রুটে নতুন যাত্রার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী এ পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে। নতুন রুট খুলনা থেকে যাত্রা শুরু করে যশোরের সিঙ্গিয়া থেকে নড়াইল হয়ে মধুমতি সেতু পার হয়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, সেখান থেকে ফরিদপুরের ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকা আসবে। আবার ঢাকা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোলেও যাবে। এখন চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষা।

রেলওয়ের খুলনা স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা জানান, ট্রেন চলাচলের কোনও সিডিউল বা নির্দেশনা তিনি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাননি। নতুন কোনও বগিও খুলনায় আসেনি। তবে, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে তিনি ট্রেন চালু করার বিষয়ে প্রস্তুত আছেন। মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে ট্রেন চালু করতে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

Source link

Related posts

মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১ জনের মৃত্যু

News Desk

ডুবেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, যান চলাচল বন্ধ

News Desk

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাড়ি ছাড়ছেন স্থানীয়রা 

News Desk

Leave a Comment