‘চিকা মারা’ (দেয়াল লিখন) কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৮ জন নেতা–কর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ শুক্রবার রাত ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে৷ বিবাদমান উপপক্ষ দুটি হলো ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) ও বিজয়।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে এ এফ রহমান হল থেকে ভার্সিটি এক্সপ্রেসের ‘চিকা’ মুছে দেন বিজয়ের নেতা–কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকালে দুই উপপক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে বিতণ্ডা হয়৷ একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিজয়ের নেতা–কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে এ এফ রহমান হলের সামনে ও ভিএক্সের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নেন। রাত ১০ টার দিকে ভিএক্সের নেতা–কর্মীরা এ এফ রহমান হল দখলে নেন৷ এ সময় সংঘর্ষে দুই উপপক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হন। এর মধ্যে ভিএক্সের ২ জন ও বিজয়ের ৬ জন৷
আহতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন৷ পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
জানতে চাইলে চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোন্দকার মোহাম্মদ আতাউল গণি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ এফ রহমান হলের ঝামেলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন৷ কারো মাথা ফেটেছে৷ কারো হাত, পা, কোমরসহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে৷
বিজয়ের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই তাঁদের ‘চিকা’র ওপর ভিএক্সের নেতা–কর্মীরা ‘চিকা’ মেরেছে।
মোহাম্মদ ইলিয়াছের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার নির্দেশে ভিএক্সের নেতা–কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার চান৷
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিজয়ের নেতা–কর্মীরায় ইচ্ছে করে তাদের ‘চিকা’ মুছে দিয়েছে৷ তাঁদের ‘চিকা’ নতুন নয়৷ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল৷ বিজয়ের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য ‘চিকা’ মুছে ঝামেলা করতে চেয়েছে৷ তাঁরা এটি প্রতিহত করেছেন৷
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত৷ দুই পক্ষকেই নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে৷ এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই দুইটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ও আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসাবে ক্যাস্পাসে পরিচয় দেন৷ এ দুটি পক্ষের মধ্যে আবার ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। বিবাদমান ভার্সিটি এক্সপ্রেস আ জ ম নাছির উদ্দীনের ও বিজয় মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসাবে পরিচিত।