কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে জামালপুরের পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, জামালপুর মহাশ্মশান, ব্রহ্মপুত্র নদের সেতু, বসতবাড়িসহ অনেক স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন মেরামতের কাজ শুরু না করলে শেরপুর-জামালপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বাঁধটির সিসি ব্লকসহ মাটি সরে গিয়ে প্রায় ২০ মিটার ধসে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্তের। সেতুর পিলারের গোড়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।
ভাঙনের স্থানের আরও ফাটল ধরেছে। ভাঙনের স্থানে স্থানীয় লোকজন বাঁশ দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। বাঁধের ওপর দিয়ে ওই স্থানে হেঁটে চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
ভাঙনে শাকিল নামের ব্যক্তি বসতভিটা হুমকির মধ্যে পড়েছে। ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়দিন আগে বাঁধে বৃষ্টির পানি ঢুকে প্রথমে ছোট একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন বৃষ্টির পানিতে আস্তে আস্তে ধসে যাচ্ছে বাঁধ। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে পুরো বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে বাঁধটির এমন বেহাল দশা। তারপরও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মেরামতের কোনও উদ্যোগ নেয়নি।
পাউবোর জামালপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে প্রায় ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে শুরু করে শহরের পাথালিয়া পর্যন্ত বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। বাঁধটি শহর রক্ষাসহ জামালপুর পৌরসভা ভবন, শতবর্ষী জিলা স্কুল, পৌর কমিউনিটি সেন্টার, এলজিইডি ভবন, সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের (এসপি) বাসভবন, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জজকোর্ট, জেলা পরিষদ ভবন, সদর থানা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় নির্মাণে হয়।
এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ শুরু হলে বাঁধের নিচের সিসি ব্লক ও মাটি সরে গত সপ্তাহে বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর থেকে একটু একটু করে ভাঙছে। কিন্তু বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আরও ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে মহাসড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এ কারণে দ্রুততম সময়ে মধ্যে মেরামত করা না হলে বড় ধরনের ক্ষতি সম্মুখীন হতে হবে বলে এলাকাবাসী দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে জামালপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান বলেন, ভাঙনের স্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।