নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় জেলেদের চাল আত্মসাৎ করার দায়ে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ চার জনকে ৯ বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৮০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আসামিরা হলেন- নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মেহরাজ উদ্দিন, চাল বিতরণের তদারকি কর্মকর্তা স্থানীয় তহশিলদার মো. গোলাম ফারুক, ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য তাহেরা বেগম এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য ছকিনা খাতুন।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এ এন এম মোর্শেদ খান এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৫ মে ৩৮৯ জন জেলে ও ১১৯ জন হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দ করা ৪৬ টন চাল বিতরণে অনিয়ম করেন তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. মেহরাজ উদ্দিন। এতে সরকারি তালিকার প্রকৃত লোকদের না দিয়ে নিজের অনুসারীদের মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ চাল বিতরণের পর বাকিটা আত্মসাৎ করেন।
এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ছিদ্দিক আহমেদ জুয়েলকে মারধর করেন চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা। এ ঘটনায় সচিব বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ মে হাতিয়া থানায় মামলা করেন। পরে ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
মামলার রায়ে আসামিদের প্রত্যেককে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ৪০৯ ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড; ৪৬৫, ৪৭১ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫ (২)-এর প্রত্যেক ধারায় দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ৪২০, ৪৬৭ ও ৪৬৮ ধারায় আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। ধার্য সাজাগুলো একসঙ্গে কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছেন আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন কামরান বলেন, বাদীর অভিযোগের সঙ্গে ঘটনার যথেষ্ট গড়মিল রয়েছে। আমরা ন্যায় বিচারের স্বার্থে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবো।