পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা, কচিখালী ও দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র এবং পর্যটনকেন্দ্র করমজল। তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র এবং পর্যটনকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির জানান, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট উচ্চতার পানিতে প্লাবিত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র। এ ছাড়া কটকা ও কচিখালী পর্যটন স্পটে তিন থেকে চার ফুট উচ্চতায় পানি বেড়েছে। চলতি পূর্ণিমা ও লঘুচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে এই জোয়ারের পানি। তবে পানি বাড়লেও বন্যপ্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
আজাদ কবির বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি মাথায় রেখেই বনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জায়গায় উঁচু টিলা তৈরি করা হয়েছে। যাতে বনে পানি বাড়লে বন্যপ্রাণীগুলো সেসব উঁচু টিলায় আশ্রয় নিতে পারে। টিলার সুফলে এর আগে বনের অভ্যন্তরে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় কয়েক ফুট পানি বৃদ্ধি পেলেও কোনও প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
এদিকে, করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হলেও তারা আরও বেশি আনন্দ উপভোগ করছেন বলেও জানা গেছে। বনের অভ্যন্তরে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় অনেক বেশি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যপ্রাণীরা বনের বিভিন্ন উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বনের কোথাও কোনও প্রাণীর ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কুমার সত্বিক জানান, মোংলা ও পশুর নদীতে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্লাবিত হচ্ছে। সাগরে একটা লঘুচাপ আছে। তবে ঝুঁকি নেই।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা সৈকত বর্মণ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বন্দরে সার ও কয়লাসহ আটটি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। তবে সেসব জাহাজে পণ্য খালাস-বোঝাই চলছে।’