কন্যা সন্তানসহ তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে আটকের ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় তৃতীয় লিঙ্গের তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনিকা নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজন একটি কন্যা সন্তান নিয়ে বিকালে বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। এ সময় বাসে থাকা অন্য যাত্রীদের সন্দেহ হলে একজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন। পরে টাঙ্গাইল সদর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে কন্যা সন্তানসহ আটক করে থানা নিয়ে আসে। আটকের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তৃতীয় লিঙ্গের আরও কয়েকজন একত্রিত হয়ে ফাঁড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আটক মনিকা জানান, তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শেহরীপূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি আগে ছিলেন কামরুজ্জামান। ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে একই উপজেলার পপি খাতুন নামের এক নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এরপর থেকেই তার শারীরিক পরিবর্তন হতে থাকে। এ কারণে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চাচাতো ভাইকে বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। ২০১৮ সালে তিনি তৃতীয় লিঙ্গে পরিণত হয়ে নাম রাখেন মনিকা। এরপর থেকেই তিনি তার কন্যা সন্তানকে লালন পালন করছেন। গ্রামের বাড়ি জামালপুর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন। এ সময় টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শামীম হোসেন বলেন, মনিকা তার মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। তৃতীয় লিঙ্গের একজনের কোলে সন্তান দেখে বাসে অন্যান্য যাত্রীদের সন্দেহ হয়। এরপর এক যাত্রী ৯৯৯-এ কল করে জানান। পরে শহরের রাবনা বাইপাস মোড় থেকে তাকে সন্দেহমূলকভাবে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ খবর পেয়ে তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজনে থানায় হামলা চালিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করে। তিন জনকে আটক করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তিনি আরও জানান, মনিকা ওরফে কামরুজ্জামানের সাবেক স্ত্রীকে খবর দেওয়া হয়েছিল। তিনি এসেছেন এবং তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্তান তাদেরই। তার স্বামীর শারীরিক পরিবর্তন হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছেন তিনি। এ কারণে সন্তানটি স্বামী মনিকা ওরফে কামরুজ্জানের কাছেই থাকে। এ জন্য মনিকাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।