টানেল দিয়ে চলতে পারবে না যেসব যানবাহন
বাংলাদেশ

টানেল দিয়ে চলতে পারবে না যেসব যানবাহন

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) দ্বার খুলছে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের। টানেলটি কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগকে সহজতর করবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দিয়েছে।

তবে টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ দুই চাকা ও তিন চাকার যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। তবে পণ্যবাহী যানবাহনসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করবে। ইতোমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে কোন যানবাহনে কত টাকা টোল দিতে হবে।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুন উর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার চালানো নিরাপদ হবে না। দুই চাকা এবং তিন চাকার যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। ডিজাইন অনুযায়ী টানেলের ভেতর ৮০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলবে। যেহেতু টানেল কনসেপ্ট আমাদের জন্য নতুন, ফলে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। টানেল অন্য যেকোনও ব্রিজ বা সড়কের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হচ্ছে।’

এদিকে, গত ১৩ ‍জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল নির্ধারণ করে দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পারাপারে সর্বনিম্ন টোল ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাইভেটকার ও জিপের জন্য। সর্বোচ্চ টোল দিতে হবে ট্রাক ও ট্রেইলরকে। 
ট্রেইলরের ক্ষেত্রে নির্ধারিত টোলের সঙ্গে প্রতিটি এক্সেলের জন্য আরও ২০০ টাকা করে বাড়তি দিতে হবে। এ ছাড়া পিকআপ ২০০, মাইক্রোবাস ২৫০, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০, বাস (৩২ আসনের বেশি) ৪০০, বাস (৩ এক্সেল) ৫০০, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০, ট্রাক ও ট্রেইলর (৩ এক্সেল) ৮০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৪ এক্সেল) ১০০০ এবং চার এক্সেলের বেশি হলে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ করে দিতে হবে।

গত ২৬ অক্টোবর বনানীতে সেতু ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জিডিপিতে বার্ষিক শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। দৈনিক ১৭ হাজার ২৬০ এবং বছরে ৭৬ লাখ যানবাহন চলাচল করবে এ পথে। ২০৪০ সালে দৈনিক ৬২ হাজার চলাচলের টার্গেট রয়েছে টানেল দিয়ে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। গত বছরের ২৬ নভেম্বর টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের একটি টিউবের পূর্তকাজের সমাপ্তি উদযাপন করা হয়েছে। এই উদযাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়লি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

Source link

Related posts

‘তীব্র গরমে’ চু্য়াডাঙ্গা ও পাবনায় ২ জনের মৃত্যু

News Desk

শেষ পর্যন্ত ধসেই গেলো গিদারি নদীর সেই ব্রিজটি

News Desk

চার দেয়ালে বন্দি ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানের স্রষ্টা

News Desk

Leave a Comment