সিলেট নগরীর টিলাগড়ে ফুট ওভারব্রিজ নয়, যেন মৃত্যুর সিঁড়ি বসিয়েছে সিলেট সিট করপোরেশন। রাস্তা পারাপারের জন্য সদ্য স্থাপনকৃত ফুট ওভারব্রিজটি উদ্বোধনের আগেই হয়ে উঠেছে প্রাণহানির কারণ। এটির উপরের রেলিং থেকে মাত্র এক-দেড় হাত দূরত্বে টানা রয়েছে ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যুতিক লাইন। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ফুট ওভারব্রিজ স্থাপনের ফলে এটি পারাপারের সময় যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।
সিলেট মহানগরীর ব্যস্ততম পাঁচ স্থানে ‘ফুট ওভারব্রিজ’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। প্রথম ধাপে নগরীর টিলাগড় পয়েন্ট ও এমসি কলেজ গেটের মাঝিমাঝি স্থানে ৩ কোটিরও বেশি টাকা ব্যায়ে ‘ফুট ওভারব্রিজ’ স্থাপন করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শীঘ্রই সেটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তবে সচেতন মহল ও স্থানীয়দের বক্তব্য- টিলাগড়ের ফুট ওভারব্রিজটি সিসিক বসিয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। কারণ- এটির (পশ্চিম পাশের) উপরের রেলিং থেকে মাত্র এক-দেড় হাত দূরত্বে টানা রয়েছে ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যুতিক লাইন। এ লাইনের স্পর্শে গেলেই ঘটতে পারে এই প্রাণহানি। যার ফলে উদ্বোধনের আগেই টিলাগড়ের ফুট ওভারব্রিজটি হয়ে বসেছে মৃত্যুসিঁড়ি। অথচ সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই সিটি করপোরেশেন কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে সিসিক কর্তৃপক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা। সিলেট মহানগরীতে ধাপে ধাপে ৫টি ‘ফুট ওভারব্রিজ’ স্থাপনের বিষয়টি সিসিকের ২০২০-২১ সালের বাজেট পেশকালে তুলে ধরেছিলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ওই সময় তিনি বলেন, সিলেট মহানগরীতে রাস্তা পারাপারে ঝুঁকি এড়াতে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মহানগরীর মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের সামনে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের লক্ষ্যে কার্যাদেশ হয়েছে। দ্রুত সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে মদিনা মার্কেট পয়েন্ট, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, হুমায়ুন রশীদ চত্বর এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ঘোষণার ৭ মাসের মাথায় টিলাগড়ে সিসিক স্থাপন করেছে ‘ফুট ওভারব্রিজ’। এতে ব্যস্ততম এ সড়কে যান ও জনচলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে বলে মনে করছে সিসিক কর্তৃপক্ষ। তবে বন্দরবাজারস্থ ‘ফুট ওভারব্রিজ’র মতো এটিও ব্যবহৃত না হলে সিসিকের বড় অংকের আরেকটি আর্থিক বিনিয়োগ লুকসানের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। পাশপাশি উদ্বোধনের আগেই টিলাগড়ের ফুট ওভারব্রিজটি হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের আতঙ্কের কারণ। আলাপকালে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এই ওভারব্রিজের পশ্চিমপাশের রেলিং থেকে বিদ্যুতের লাইনের দূরত্ব মাত্র এক-দেড় হাত। সারাদিন অনেককেই এখানে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়। ছোট ছোট বাচ্চাদেরও এখানে উঠতে দেখা যায়। কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা, , এমনকি প্রাণহানিও।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কর দিলেও তারা রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়ে সিসিকের ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, বিষয়টি খেয়াল করিনি। এমন হলে সত্যিই ভয়ঙ্কর বিষয়। এটি বসানোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি খেয়াল করা উচিত ছিলো।
সূত্র :সিলেট ভিউ ২৪