সারিবদ্ধভাবে খামারে দাঁড়িয়ে আছে কালো, লাল, সাদা আর বাদমি রঙের গরু-মহিষ। তাদের নাম রাখা হয়েছে ‘পরী’, ‘লাল বাদশা’, ‘পাগলা বাবা’। শুক্রবার টেকনাফ উপজেলার লম্বরী নুর অ্যাগ্রো ফার্মে এই চিত্র দেখা গেছে। এ ছাড়া গোদারবিল এলাকায় খামারে গরু-মহিষ কিনতে ভিড় করছেন লোকজন।
সরেজমিন দেখা গেছে, নুর অ্যাগ্রো ফার্মে বিশাল খামারে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণ বাড়াচ্ছে ‘পরী’, ‘লাল বাদশা’, ‘পাগলা’ ইত্যাদি নামের শতাধিক বিশাল আকৃতির গরু। ওই খামারে ১০৪টি গরু, ১৭টি মহিষ রয়েছে। সেগুলোর বেশির ভাগই ১০-২০ মণ ওজনের।
নুর অ্যাগ্রো ফার্মের পরিচালক আবদুল করিম বলেন, ‘মানুষের চাহিদার কথা ভেবে ছোট-বড় গরু-মহিষ খামারে রেখেছি, যাতে কেউ এসে ফিরে না যায়। অন্য বছরের তুলনায় এবার খামারে অর্ধশতাধিক কোরবানির প্রাণী রয়েছে। বেচা-বিক্রিও হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘১৫ মণ ওজনের লাল বাদশার দাম ৮ লাখ, ১৭ মণ ওজনের পরীর দাম ৯ লাখ এবং ২০ মণ ওজনের পাগলার দাম ১০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। বড় আকারের গরুগুলো দেখতে অনেকেই এখন ভিড় করছেন খামারে। আমরা কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে এগুলোও বিক্রি করে দেবো।’
এদিকে গোদারবিলে ‘রাজা’, ‘বাদশা’, ‘এমবাপ্পে’, ‘বাহাদুর’ নামের গরু দেখতে মানুষ ভিড় করছেন মো. ফারুক এবং জিয়াউর রহমানের খামারে।
খামারি মোহাম্মদ ফারুক জানান, তার বাহাদুর গরুটি দেখতে সুন্দর। ১০ মণ ওজনের বাহাদুরের দাম ৭ লাখ। চিকিৎসকের পরামর্শে সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তিতে বড় আকারের এটি লালন-পালন করেছেন।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানায়, সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আড়াইশ’ প্রাণী খামার রয়েছে। এর মধ্যে বড় খামার অর্ধশতাধিক। এসব খামারে ১৫ হাজারের বেশি গরু, মহিষ, ছাগল আছে। উপজেলায় কোরবানির প্রাণীর চাহিদা রয়েছে ৯ হাজারের মতো। অনেকে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিক্রি শুরু করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রহিম আজাদ বলেন, ‘খামারিদের কোরবানির প্রাণী হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রির ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় গরু-মহিষ বাজারে নিয়ে যাওয়ার পথে দিদ্বিদিগ ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ কারণে আমরা তাদের অনলাইন অথবা ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে বিক্রির জন্য উৎসাহিত করছি। এভাবে অনেকে বিক্রিও করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানির প্রাণী রয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ সব সময় খামারিদের পাশে আছে। আমরা তাদের গরুগুলো দেখেছি। বেশির ভাগই সুস্থ-সবল।’
টেকনাফের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, ‘প্রতি বছর হাটে গিয়েই গরু কিনতাম। এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হাটে যাবো না। অনলাইনে কিনবো। একটি গরু পছন্দও করেছি। দামও বেশি না। তবে অগ্রিম কোনও পেমেন্ট করছি না। অনলাইনের বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবের মিল পেলে তবেই কিনবো।’