স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অতিমাত্রায় বৃষ্টি ও উঁচু অঞ্চল থেকে পানি এলে ঢাকাও প্লাবিত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, বন্যা কী পর্যায়ে যাবে সেটার পূর্বাভাস কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেয়নি। যারা পূর্বাভাস দেয় তারা বলেছে, একটা আগাম সতর্কতা আছে। তবে সেটা কোন পর্যায়ে যাবে সেটি বলা হয়নি
রবিবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে এক বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
যেকোনো খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “নিম্নাঞ্চল কিন্তু দ্রুত প্লাবিত হয়। আমরা এখনও সব কাজ করে ফেলতে পেরেছি, তা নয়। কিছু খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে, উদ্ধারের কাজ আরও চলমান আছে।”
ঢাকায় এ পর্যন্ত কতগুলো খাল উদ্ধার করা হয়েছে, জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা সিটি করপোরেশনে মোট ২৬টি খাল হস্তান্তর করেছি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সাড়ে ৬ একর জমি দখলমুক্ত করেছে। উত্তর সিটি করপোরেশন ২৫ একর দখলমুক্ত করেছে। এ কাজগুলো চলমান আছে।”
সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “বন্যা কী পর্যায়ে যাবে সেটার পূর্বাভাস কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেয়নি। যারা পূর্বাভাস দেয় তারা বলেছে, একটা আগাম সতর্কতা আছে। তবে সেটা কোন পর্যায়ে যাবে সেটি বলা হয়নি।”
এবার ঢাকায় ১৯৮৮ সালের মতো বন্যা হতে পারে কি-না, প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, “বন্যা হবে, কিন্তু কতটুকু হবে সেটির পূর্বাভাস কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেয়নি। ১৯৯৮ সালের বন্যাকে আমরা মোকাবিলা করেছি, আগেও বহুবার মোকাবিলা করেছি।”
“১৯৯৮ সালে বলা হয়েছিল ২ কোটি মানুষ মারা যাবে; কিন্তু একজনও মারা যায়নি। সে সময় মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। যেখানে যা করা দরকার সেটি করা হচ্ছে। তবে যেকোনো খারাপ পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। অপ্রস্তুত থাকা উচিত না। আমরা সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি।”
যত শঙ্কা জলাবদ্ধতা নিয়ে
স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আগে এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
জলাবদ্ধতার বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, “সিটি কর্পোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলো বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চল। সেখানে অবকাঠামোগত সমস্যাও আছে, যা নিরসনের জন্য চার হাজার কোটি টাকার বেশি একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে, কাজটি শেষ হলে সেখানকার অনেক উন্নতি হবে।”
তিনি বলেন, “খাল হস্তান্তরের সুফল আমরা ইতোমধ্যে ভোগ করছি। যদিও এসব খালের অনেক অংশ অনেকে দখল করে নিয়েছে, যা দখলমুক্ত করা অনেক কঠিন।”
“আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ সবাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগে আক্রান্ত এলাকায় মানুষের পাশে সর্বাত্মকভাবে অবস্থান করছেন।”
ঢাকা প্লাবিত হলে সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, একশ অথবা ১১০ বছরে হয়ত এমন দুর্যোগ আসে। এ অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন সময় এমন দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে।
তাজুল বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে বন্যা মোকাবিলায় যুগ্ন সচিব জসিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। পরে প্রয়োজনে পরিবর্তন করা হবে।
পানির চাপ কমাতে সড়ক কেটে ফেলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি যাতে সরে যেতে পারে এজন্য কয়েকটি রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। কিছু রাস্তা কাটার প্রয়োজন পড়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। এতে পানি সহজে নেমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কোথাও প্রয়োজন হলে আরও রাস্তা কেটে ফেলা হবে।”