করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর ‘লকডাউনের’ মধ্যেও রাজধানী ঢাকার রাস্তায় গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে। গণপরিবহন না থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই; দেশে লকডাউন চলছে। ঈদ শপিংকে ঘিরে শপিংমলগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। মার্কেট এলাকার সড়কগুলোতেই সবচেয়ে বেশি যানজট।
দেশে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গেল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে যে লকডাউন শুরু হয়েছিল তখনকারের চেয়ে এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। সংক্রমণ বাড়ার পর সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক থাকলেও কমার সঙ্গে সঙ্গে ঠিকই রাস্তায় বের হয়ে পড়েন তারা। ঈদকে সামনে রেখে শপিংমলগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর লকডাউনের বিধি-নিষেধ একেবারেই মানা হচ্ছে না। সচেনতার অভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা তেমন দেখা যাচ্ছে না মানুষের মাঝে। গতকাল রবিবার রাজধানীর পল্টন, শান্তিনগর, মগবাজার ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে প্রতিটি সড়কেই চোখে পড়েছে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ। মোড়ে মোড়ে ছিল ভয়াবহ যানজট। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশায় করেই যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ। ঢাকার সড়কে গতকাল যানজট ছিল গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি। কর্মস্থলমুখী মানুষের বাইরে অন্যান্য পেশার মানুষও কাজে বের হচ্ছেন। রাস্তায় পুলিশের কোনো তৎপরতাও চোখে পড়েনি তেমন। ইফতার আর মৌসুমি ফলের দোকানিদের দখলে ফুটপাত। শান্তিনগর পীর সাহেবের গলির মুখে এক ফল বিক্রেতা বলেন, ‘লকডাউনে কেউ একটি টাকা দেয়নি। এভাবে কি চলা যায়? তাই বাধ্য হয়ে বের হয়েছি।’
সড়কে বেড়েছে রাইড শেয়ারিংয়ের গাড়ি। অ্যাপস ছাড়া ব্যক্তিগতভাবেই মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চালাচ্ছেন চালকরা। জাকির হোসেন নামে একজন পাঠাও চালক বললেন, ‘মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবন চলে, এটাই রুজি-রোজগারের পথ। তাই পেটের তাগিদে বের হতে হয়েছে।’ এদিকে নয়াপল্টন এলাকায় পলওয়েল মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, মগবাজারের বিশাল সেন্টারের সামনে ব্যক্তিগত ও রিকশার ভিড় দেখা গেছে বেশ। মূলত ক্রেতাবহনকারী এসব যানে মার্কেটের সামনের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আর মার্কেটগুলোও মানুষে ঠাসা। এমন পরিস্থিতিতে আবারও করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, ‘লকডাউন তুলে নেওয়ার কিছু শর্ত আছে। সরকার সে পথে হাঁটছে না। আবার শপিংমলসহ ব্যক্তিগত যানবাহন ও মানুষের অবাধ যাতায়াতে লকডাউন বলে কিছু আর থাকছে না। যেভাবে মানুষ শপিংমলমুখী হয়েছে তাতে ঈদের পর করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।’