সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামে রুপালী বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছেন তালা থানা পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের মনিরুজ্জামান (মনু)সরদারের স্ত্রী। সরেজমিন পরিদর্শন ও এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাত আনুমানিক ২ টার দিকে মনুর ভাই আসাদুল সরদার মাছের ঘের থেকে ফেরার সময় বাড়ির উত্তর পাশে আম গাছে রুপালী বেগমের লাশ ঝুলতে দেখে বাড়ির অন্য লোকদের জানান।
এসময় তাদের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে রুপালী বেগমের লাশ গাছে ঝুলতে দেখেন বলে জানা যায়। সকাল ১১ টায় তালা থানা পুলিশের এস আই কাওছার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট করেন। এসময় জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু ও ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ সহ শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সরেজমিনে দেখা যায়, মনুর পূর্ব পোতার ঘরের পিছনের জানালার ধারে একাধিক মানুষের পায়ের চিহ্ন। ২ কক্ষ বিশিষ্ট কক্ষের উত্তর পাশের ঘরে রুপালী একমাত্র পুত্রকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। স্বামী পাশের ঘরে একা ঘুমাচ্ছিলেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ঘটনার রাতে রুপালী বেগম ২টি মোবাইল নাম্বারে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। পুলিশ তার ব্যবহারিত ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নারী পুরুষ বলেন, এলাকার উঠতি বয়সী একাধিক ব্যক্তির সাথে তার মন দেয়া নেয়া ছিল। সে কারণে স্বামীর সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো না থাকার কারণে আলাদা ঘরে রাত্রি যাপন করতেন। ওই গ্রামের ফকির পাড়ার ২ ব্যক্তির সাথে তার প্রেমজ সম্পর্ক ওপেন সিক্রেট। এই প্রেমের সূত্র ধরে তাকে হত্যা করা হতে পার বলে এলাকাবাসির ধারণা। রুপালী বেগমের মৃত্যু কিছু দিন আগে এদের মধ্যের ১ জন মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে ওই ব্যক্তির পারিবারিক ঝগড়া বাঁধে। তার রেশ ধরে বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুরও করেন তিনি।
এলাকাবাসি আরও বলেন, পরকিয়ার বলী হতে হয়েছে রুপালী বেগম কে। এটা আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা বলে তারা মনে করেন তারা। রুপালীর গায়ের ব্লাউজ ছেড়া ছিল, পরিধেয় শাড়ি দিয়ে তার হাতে বেঁধে রাখার দাগও দেখেছেন তারা। ধর্ষণে ব্যার্থ হয়ে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। এর আগে চক্রটি মনু সরদার কে সহিদুলের মাছের ঘেরে কাজ করার সময় গভীর রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে জানা যায়। এঘটনায় তখনও তালা থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল বলে বড় ভাই সদুরুজ্জামান (৫৮) জানিয়েছে।
জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। ভিষেরা রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে আসলে কি ঘটেছে। তালা থানা পলিশের এস আই কাউছার জানান, এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তালা থানায় ১ টি ইউডি মামলা হয়েছে। যার নং -১০। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।