বাংলাদেশ

তিন দিনের মাথায় আরেক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে ও গুলি করে হত্যা

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তাসনিমারখোলা (ক্যাম্প-১৩) আশ্রয়শিবিরে দুই রোহিঙ্গা নেতাকে (মাঝি) কুপিয়ে হত্যার তিন দিনের মাথায় আবারও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে উপজেলার তাসনিমারখোলার পাশের বালুখালী (ক্যাম্প-১৯) আশ্রয়শিবিরে এক রোহিঙ্গা ব্যক্তির গলা কাটার পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

পূর্বশত্রুতার জের ধরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকার বাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এ ঘটনার পর আশ্রয়শিবিরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

নিহত রোহিঙ্গার নাম সৈয়দ হোসেন (২৩)। তিনি বালুখালী আশ্রয়শিবিরের এ ব্লকের ১০ নম্বর শেডের বাসিন্দা মৃত জমিল হোসেনের ছেলে।

রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে পালংখালীর ক্যাম্প-১৯–এর এ ব্লকের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন সৈয়দ হোসেন। কিছুক্ষণ পর পাঁচ-ছয়জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অতর্কিত সৈয়দ হোসেনের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রথমে সৈয়দ হোসেনকে জাপটে ধরে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলে। এরপর মাটিতে ঢলে পড়লে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে এপিবিএন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা এর আগে সৈয়দ হোসেনের বাবা জমিল হোসেনকে খুন করেছিল। বাবার খুনের মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তৎপর ছিলেন সৈয়দ হোসেন। এই আক্রোশের বশে আসামি পক্ষ কিংবা তাদের ভাড়াটে দুষ্কৃতকারীরা সৈয়দ হোসেনকে হত্যা করতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে এপিবিএন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় পালংখালীর তাসনিমারখোলা (ক্যাম্প-১৩) আশ্রয়শিবিরের এ ব্লকে ক্যাম্পের দুই নেতা (মাঝি) মো. আনোয়ার (৩৮) ও মৌলভি মো, ইউনুসকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। মো. ইউনুস ওই শিবিরে এফ ব্লকের ২ নম্বর শেডের বাসিন্দা মৌলভি সৈয়দ করিম এবং মো. আনোয়ার একই ক্যাম্পের এফ ব্লকের ২ নম্বর শেডের রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদের ছেলে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার উখিয়া থানায় এজাহারনামীয় ২০ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহত আনোয়ারের বড় ভাই। এপিবিএন এ পর্যন্ত চার রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সামসু আলম (৫২), রশিদ আহমদ (৫৩), মাহবুবুর রহমান (২৮) ও নজির আহম্মদকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে। সবাই ক্যাম্প-১৩ এর রোহিঙ্গা শরণার্থী।

Related posts

বরিশালে সৌদির খেজুর চাষে সফলতা পেলো

News Desk

নারায়ণগঞ্জে ৪ ঘণ্টা ধরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ২০

News Desk

নকল কিটসহ অবৈধ মেডিকেল পণ্য জব্দ, আটক ৯

News Desk

Leave a Comment