তিস্তার সেচে ১১০০ কোটি টাকার বোরো উৎপাদন
বাংলাদেশ

তিস্তার সেচে ১১০০ কোটি টাকার বোরো উৎপাদন

নীলফামারীর ডালিয়ায় সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানে এলাকার প্রতিটি কৃষকের উঠান ভরে গেছে। তিস্তার সেচে প্রায় ১১০০ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

সেচ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ ধান ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। আবহাওয়ায় ভালো থাকলে বাকি ধান আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঘরে তুলতে পারবেন।

এদিকে, তিস্তা ব্যারেজের কমান্ড এলাকার সেচে নীলফামারী সদর, জলঢাকা, ডিমলা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর ও গঙ্গাচড়া উপজেলাসহ ৪৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেন কৃষকরা। এতে তাদের বিদ্যুৎ ও ডিজেল সাশ্রয় হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচে কৃষক এক হেক্টরে ধান পাবেন ৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। আর তিস্তার সেচে কৃষক প্রতি হেক্টরে ধান পাবেন ৬ মেট্রিক টন। এতে সার্বিকভাবে ৪৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তিস্তার সেচে ধান উৎপাদন করে ১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন কৃষকরা। 

কৃষকরা বলছেন, নদীতে চাহিদা মোতাবেক যদি উজান থেকে পানি পেলে, প্রথম ফেজে ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেওয়া যেতো। উজানের পানি স্বল্পতা থাকার পরও ৭০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া গেছে।

তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় সদরের রামনগর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামের কৃষক মাহফুজার রহমান জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সেচের পানি বেশি পাওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি ৭ বিঘা জমির মধ্যে সাড়ে ৬ বিঘা জমির ১৭৫ মণ ধান পেয়েছেন। আর বাকি আধাবিঘা জমির ধান আবহাওয়া ভালো হলে ঘরে তুলবেন। সেখানেও ১২-১৫ মণ ধান পাবে বলে আশা করেন তিনি।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার মধ্যে নীলফামারীতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮২ হাজার ১১০ হেক্টর। মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর বোরো আবাদে পানি সংকট হয়নি। তাই ফলনও ভালো হয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্প কমান্ড এলাকা ছাড়াও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকার। 

গড়ে প্রতি বিঘায় ২৫-২৭ মণ ধান উৎপাদন করেছেন কৃষকরা

তিস্তার ডালিয়া ডিভিশনের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, শুষ্ক মৌসুমে উজানের পানি কম পাওয়ার পরও, চলতি রোরো মৌসুমে ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে নীলফামারীর ৪৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। এতে কৃষকরা গড়ে প্রতি বিঘায় ২৫-২৭ মণ ধান উৎপাদন করেছেন।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদ্দৌলা জানান, বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রে একজন কৃষক এক হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করলে খরচ হবে দশ হাজার ৫০০ টাকা। আবার ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রে এক হেক্টর জমিতে সেচ দিলে কৃষকের খরচ হয় ১৪ হাজার টাকা। সেখানে তিস্তা ব্যারেজের কমান্ড এলাকার সেচে এক হেক্টরে কৃষকের খরচ পড়ে মাত্র এক হাজার ২০০ টাকা।

উল্লেখ্য, খরিপ-১ মৌসুমে সেচ প্রদানের লক্ষে ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর টার্গেট করা হলেও, সেচ প্রদান করা হয় ৭০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। উজানে পানি বেশি থাকায় চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা সম্ভব হয়েছে।

Source link

Related posts

হিজাব বিতর্ক তুলে আমোদিনী পালকে ফাঁসানো হয়েছে: তদন্ত কমিটি

News Desk

বিমানবন্দরে‘এয়ারপোর্ট রেস্টুরেন্ট’থেকে ২০০ মরা মুরগিসহ আটক ৭

News Desk

বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

News Desk

Leave a Comment