তুমি দুর্জয় নির্ভীক মৃত্যুহীন এক প্রাণ
বাংলাদেশ

তুমি দুর্জয় নির্ভীক মৃত্যুহীন এক প্রাণ

তুমি দুর্জয় নির্ভীক মৃত্যুহীন এক প্রাণ, বাঙালি জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান। বলছি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের কথা। যিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন রাঙামাটির নানিয়ারচরের বুড়িঘাটের একটি দ্বীপে। 

২০ এপ্রিল তার ৫১তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে বীরদর্পে লড়াই করে শহীদ হয়েছিলেন।

শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফজলুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুরজামাল হাওলাদার ও নানিয়ারচর থানার ওসি সুজন হালদার প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বিশেষ বক্তব্য দেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফকে সমাহিত করা দয়াল কৃষ্ণ চাকমা। এ সময় তিনি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন। সেই সঙ্গে তার চিরগৌরবের বীরত্বগাথা তুলে ধরেন।

এদিকে, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা ও পরিচালক ইয়াছিন রানা সোহেল, সমন্বয়ক শহীদুল ইসলাম রাসেল, জামাল হোসেন, উদ্যোক্তা পরিষদের সদস্য মাসুদ রানা রুবেল ও মো. ইব্রাহিম রনি।

কাপ্তাই লেকের অথৈ নীল পানির মাঝে ছোট্ট একটি দ্বীপে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি। এর অবস্থান রাঙামাটির নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। ২৬ মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে আক্রমণ হলে শত্রু বাহিনীর তিনটি নৌযান একাই ধ্বংস করেন।

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি

তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামে রাঙামাটি-মহালছড়ি পানিপথ প্রতিরোধ করার জন্য অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সৈন্যের সঙ্গে বুড়িঘাটে দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ পাকিস্তানি বাহিনীর কমান্ডো ব্যাটালিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পিডবোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমণ করে। মর্টারশেল আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণ প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। 

হঠাৎ একটি গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ। স্থানীয় দয়াল কৃষ্ণ চাকমা তার মরদেহ উদ্ধার করে এই দ্বীপে সমাহিত করেন। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সেই দ্বীপে নির্মিত হয় বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সালামতপুর গ্রামে ১৯৪৩ সালের মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। বাবা মেহেদী হোসেন
স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে আব্দুর রউফ ছিলেন সবার বড়। 

উপজেলার কুমারখালী হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তৎকালীন ইপিআরে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

Source link

Related posts

বিধিনিষেধের মধ্যেও জীবিকার প্রয়োজনে তারা রাস্তায়

News Desk

চুয়াডাঙ্গা করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু

News Desk

ঢাবির সব শিক্ষার্থী টিকা পেলে অক্টোবরে খুলবে হল

News Desk

Leave a Comment