জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্কুলশিক্ষার্থী কিশোরীদের উদ্দেশে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, ‘আমি জানি তোমরা মেয়েরা একটু ভয় পাও। তোমরা টিকা নিতে কোনও ভয় পাবে না। এই টিকা বেলজিয়াম থেকে আমদানি করা হয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত ও নিরাপদ। তোমরা তোমাদের সহপাঠীদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করবে, যাতে টিকা নিতে কেউ বাদ না পড়ে।’
জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে রাজশাহীতে জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকা ছাড়া দেশের সব বিভাগে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রুয়েট অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাসিক প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। অগ্রণী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিহি ও প্রজ্ঞাকে টিকা প্রদানের মধ্যে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘এই টিকা অনেক মূল্যবান। এখন যদি টিকা নেওয়া থেকে কেউ বাদ পড়, তাহলে পরে এটি নিতে হবে তিনটি ডোজের মাধ্যমে। মেয়েদের তিন ধরনের ক্যানসার বেশি হয়। জরায়ুমুখ ক্যানসার, জরায়ু ক্যানসার ও ডিম্বাশয় ক্যানসার। অন্য ক্যানসারের টিকা আবিষ্কার করা না গেলেও জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে দেশে অনেক মেয়ে মারা যায়। সারা পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশে এ রোগে মৃত্যুর হার চতুর্থ। এটির প্রধান কারণ হচ্ছে বাল্যবিবাহ। অল্প বয়সে বিবাহিত নারীদের এ ক্যানসারের সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোভিডের আগে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ ছিল শতকরা ৩১ ভাগ। কোভিডের পরে সেটা দাঁড়িয়েছে ৪১ ভাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই রোগের লক্ষণ প্রথমে বোঝা যায় না। যখন বুঝতে পারা যায় তখন এই রোগের কথা কাউকে লজ্জায় বলা যায় না।’
তিনি আরও জানান, মহানগর পর্যায়ে ২৩ হাজার ৫শ ১০ জন শিক্ষার্থীকে এই টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর রাজশাহী বিভাগে প্রায় ৯ লাখ ৫৫ হাজার জনকে এ টিকা দেওয়া হবে।
নগরীর ৩০৬টি স্কুলে ২৫৩টি কেন্দ্রে ২ জন টিকাদানকারী, ২ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত রয়েছেন। কমিউনিটি পর্যায়ে ৭ নভেম্বর শুরু হবে। পরবর্তী ৮ কর্মদিবসে ৬০টি কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ ক্যাম্পেইনে নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটি পর্যায়ে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।