থামছে না মায়ের কান্না-আহাজারি, বাবা শোকে পাথর
বাংলাদেশ

থামছে না মায়ের কান্না-আহাজারি, বাবা শোকে পাথর

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মৃত্যুর একদিন পর শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তার মরদেহ আনা হয় জন্মভূমি মানিকগঞ্জে। জুমার নামাজ শেষে শহরের সেওতা কবরস্থানে নানার কবরে তাকে সমাহিত করা হয়।

এ সময় জাওয়াদের মা নিলুফা আক্তারের আহাজারিতে মানিকগঞ্জ স্টেডিয়াম এলাকায় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তার কান্না থামছেই না। একমাত্র সন্তান হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা ডা. আমান উল্লাহ আমান।

ডা. আমান জানান, জাওয়াদ তাদের কোলজুড়ে এসেছে বিয়ের অনেক বছর পরে। তখন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন তিনি। সে সময় ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জন্ম হয় জাওয়াদের। মা নিলুফা আক্তার খানম সেখানকার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। চট্টগ্রামে প্রাথমিক পর্যন্ত লেখা পড়াশোনা করেছেন জাওয়াদ। চট্টগ্রামের প্রায় সব অলিগড়ি চেনা ছিল তার। পরে মায়ের কর্মস্থল সাভার ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়ে স্বপ্নের বিমান বাহিনীতে যোগ দেন জাওয়াদ।

জাওয়াদের বাবা আরও বলেন, ‘ঝুঁকি জেনেও একমাত্র ছেলের একান্ত ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে বিমান বাহিনীতে পাঠাই। কিন্তু ভাবিনি, এত অল্প সময় দেশমাতৃকার সেবা শেষে আমাকে, ওর মাকে এবং স্ত্রী আর দুটি অবুঝ সন্তানকে রেখে এভাবে না ফেরার দেশে যাবে সে।’   

জাওয়াদের খালাতো ভাই শিমুল জানান, বিমান বাহিনীর ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার পেয়েছিলেন জাওয়াদ। চীন, রাশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ট্রেনিংয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। বিমান বাহিনীতে সাফল্যের জন্য চিফ অফ এয়ার ও ফাইটিং পুরস্কারও তার ঝুলিতে ছিল।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন জহুরুল হক ঘাঁটির বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের কাছে ১১ নম্বর ঘাটের নতুন পতেঙ্গা টার্মিনালের বিপরীত পাশে এইচএম স্টিল ফ্যাক্টরির সামনে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে।’

ওসি আরও বলেন, ‘ওই বিমানে দুজন পাইলট ছিলেন। তাদের মধ্যে উইং কমান্ডার সুহান আহত অবস্থায় জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছেন। স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ গুরুতর আহত অবস্থায় বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১২টায় মারা যান।’

আরও খবর:

চোখের জলে পাইলট জাওয়াদকে বিদায়

দুর্ঘটনায় পাইলট জাওয়াদের মৃত্যু, মানিকগঞ্জের বাড়িতে মায়ের আর্তনাদ

চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলটের মৃত্যু

Source link

Related posts

ত্বকী হত্যার ১১ বছর পর ‘আশার আলো’ দেখছেন আইনজীবী ও স্বজনরা

News Desk

সাতক্ষীরায় বাড়ছে করোনার সংক্রমন

News Desk

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করায় জমিয়ত নেতার পদ স্থগিত

News Desk

Leave a Comment