গ্রীষ্মের দাবদাহের পর শীতের আভাস যেন এক স্বস্তির বার্তা। দিনাজপুরে ক্রমান্বয়ে কমছে তাপমাত্রা। মাঝে মধ্যেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে প্রকৃতি। শনিবার (১৬ নভেম্বর) জেলায় এই মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। নভেম্বরজুড়ে তাপমাত্রা কমতে থাকবে, আর ডিসেম্বরে শীত আরও তীব্র হবে। ডিসেম্বরের শেষে এবং জানুয়ারির প্রথমেই দিনাজপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে শৈত্যপ্রবাহ বলে জানান আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষক।
সাধারণত উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের আগমন অন্য জেলাগুলোর তুলনায় একটু আগে হয়। কুয়াশা আর শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে আসছে শীত। গত মাসের শেষের দিকেও জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ চলতি মাসে বৃহস্পতিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারেও একই তাপমাত্রা থাকলেও শনিবার তাপমাত্রা আরও কমে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা কমেছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল চারপাশ। ১০টার পর সূর্য উঠলেও তাপ সেভাবে অনুভূত হয়নি।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই জেলায় সকালে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২ কিলোমিটার, আর আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। যদিও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নওগাঁর বদলগাছিতে, ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিনাজপুর সদর উপজেলার কাটাপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই জেলায় ধান কাটা-মাড়াই একটু দেরি করেই হয়। আগে দেখতাম, ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় গরম থাকতো। এবারে এখনও পুরোপুরি ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়নি, কিন্তু শীত চলে আসলো মনে হচ্ছে।’
বলতৈড় এলাকার বাসিন্দা সেলিম রেজা বলেন, ‘শীত আমাদের কৃষকদের জন্য কষ্টের এবং আতঙ্কের একটি মৌসুম। বিশেষ করে, কুয়াশা আমাদের বেশ ক্ষতি করে। এখন আলু রোপণের মৌসুম, বীজ থেকে চারা গজাচ্ছে। যদি এভাবে কুয়াশার প্রভাব থাকে তাহলে অঙ্কুরিত গাছের সমস্যা হবে।’
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অনেকেই গরম কাপড় পরে বের হয়েছেন বাড়ি থেকে। যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এবারে শীতের আগমন আগে-ভাগেই এসেছে সেই সঙ্গে কুয়াশাও।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ক্রমান্বয়ে কমছে এই জেলার তাপমাত্রা। নভেম্বর মাস জুড়েই এই তাপমাত্রা কমার প্রবণতা থাকবে। তবে তীব্র শীত আসবে ডিসেম্বরে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে এবং জানুয়ারির প্রথম থেকেই এই জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দিনে রোদ ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া এবং উষ্ণ ও মৃদু বায়ুর সংস্পর্শের কারণে কুয়াশার আর্বিভাব হচ্ছে। কুয়াশাও ধীরে ধীরে বাড়বে এই এলাকায়।’