দিনাজপুরে হঠাৎ বৃষ্টিতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে আলু চাষিদের দুশ্চিন্তা বেশি। তবে এই বৃষ্টিতে গম, ভুট্টা ও সরিষার বেশ উপকার হবে। পাশাপাশি বোরো বীজতলার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন অনেক কৃষক।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এই বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার প্রায় ৪০০ হেক্টর আলুক্ষেতে পানি জমেছে। ইতোমধ্যে অনেক জমির পানি নেমে গেছে। বাকি জমিগুলোর পানি নামিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে কৃষকদের। সেই সঙ্গে যেসব ক্ষেতে পানি রয়েছে সেসব ক্ষেতের আলু এই সময়ে না তোলার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকরা আশঙ্কা করলেও এই বৃষ্টিপাত আলুর তেমন ক্ষতি করবে না। তবে বেশ উপকার হবে গম, ভুট্টা ও সরিষা ক্ষেতের। পাশাপাশি বোরো বীজতলারও উপকার হবে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, খনার বচনে ছিল যে মাঘের শেষে বৃষ্টি হলে উপকার হওয়ার কথা। আমরাও মনে করছি, এই বৃষ্টিপাত কৃষকের ফসলের উপকারে আসবে। গম, ভুট্টা ও সরিষার ফলন ভালো হবে। বর্তমানে বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। সেসব ক্ষেতে এই বৃষ্টি কাজ দেবে। তবে বৃষ্টির সঙ্গে হালকা বাতাসে সরিষা ও ভুট্টার যেসব গাছ হেলে পড়েছে সেগুলো উঠে দাঁড়াতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। তবে ক্ষতি হবে না। যেসব আলুক্ষেতে পানি জমেছে সেসব ক্ষেতের পানি নামিয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ জমির পানি নেমে গেছে। আগামী কয়েকদিন ক্ষেত থেকে আলু না তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে আলুর তেমন ক্ষতি হবে না।
জেলার মাতাসাগর এলাকার কৃষক নয়ন ইসলাম বলেন, আলুক্ষেতে পানি জমেছে। এতে আলু পচে যায় কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। কারণ আলুক্ষেত বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। তাছাড়া এই বৃষ্টিপাতের কারণে রোগের আক্রমণ বাড়বে।
তামুলিপাড়া এলাকার কৃষক বিপুল কুমার বলেন, উঁচু জমিতে আলু লাগিয়েছি। তাই হয়তো রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু অনেকের জমির আলু তো পানিতে ডুবে গিয়েছিল। আজ বৃষ্টি নেই, তাই ওই পানি শুকিয়ে গেছে। কিন্তু যদি আবারও বৃষ্টি হয় তাহলে ক্ষতি হবে, এটা নিশ্চিত। এই বৃষ্টিতে গম ও ভুট্টাক্ষেতের উপকার হবে। আমিও অল্প কিছু জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি।
গাবুড়া এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে আলুর ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছি। পাশাপাশি এখন বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। তাতে করে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এই বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে আলু চাষিদের।
ওই এলাকার কৃষক সন্তোষ কুমার দাস বলেন, আলুতে পানি লেগে গেছে। এমনিতেই আলুর দাম নেই, তার ওপর যদি ক্ষতি হয় তাহলে লোকসানের পরিমাণ বাড়বে। তবে এই বৃষ্টি ভুট্টাক্ষেতের জন্য বেশ উপকার হবে। পাশাপাশি বোরো ধানের জমিগুলোতেও পানি লেগেছে। ফলে কিছুটা হলেও উৎপাদন ব্যয় কমবে।