Image default
বাংলাদেশ

‘দিনের পর দিন সড়কে, চোখে ঘুম নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়’

শরীয়তপুর থেকে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ছেড়ে এসে সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে ট্রাকের সিরিয়ালে আটকা পড়েন কার্টনবোঝাই কাঁচপুরগামী ট্রাকচালক কালাম হোসেন। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত তিনি পদ্মা নদী পার হতে পারেননি। 

গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে কথা হয় তার সঙ্গে। কালাম হোসেন বলেন, ‘নদী পার হতেই দিনের পর দিন লেগে যাচ্ছে। নাওয়া-খাওয়া-ঘুম কিছুই ঠিক মতো করতে পারি না। চোখে ঘুম নিয়ে সিরিয়ালে গাড়ি ঠেলতে হয়। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় ঘাটে অনিয়ম যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের সারি। এর মধ্যে ২ কিলোমিটার যাত্রীবাহী বাসের সিরিয়াল রয়েছে। এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সারি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে এই যানজটের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার অফিস সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। যে কারণে উভয় ঘাটে একাধিক ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এদিকে নদীর পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় পল্টুন থেকে যানবাহনগুলো ওঠানামা করতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে। অনেক সময় লোড-আনলোডের পণ্যবাহী ট্রাকগুলো সংযোগ সড়কে বিকল হয়ে পড়ায় পওর রেকার দিয়ে টেনে তোলা হয়।

ফরিদপুর থেকে ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইনের যাত্রী সুমন মাহমুদ বলেন, ‘অফিসের বিশেষ কাজে ঢাকায় যাচ্ছি। দৌলতদিয়া ঘাটের যানজটের কারণে দেড় ঘণ্টা বাসে অপেক্ষার পর বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেছি। ১ কিলোমিটার হেঁটে লঞ্চে নদী পার হওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি।’

মেহেরপুর থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসা ট্রাকচালক শরিফ শিকদার বলেন, ‘দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কাঁচামাল নিয়েও আমাদের সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে। বুধবার রাত ১২টার দিকে মোড়ে আটকে থাকার পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এসে আবারও সিরিয়ালে রয়েছি। যতদিন এ ঘাটের অব্যবস্থাপনা বন্ধ না হবে, ততদিন উভয় ঘাটে যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’

দুই কিলোমিটার যাত্রীবাহী বাসের সিরিয়াল

বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী প্রকৌশলী শাহ আলম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য উভয় ঘাটে একাধিক ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় সংযোগ সড়ক থেকে যানবাহনগুলো ওঠানামা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝে অনেক যানবাহন বিকলও হয়ে যাচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান জানান, বর্তমানে এই নৌপথে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ রয়েছে। যে কারণে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘাটে কিছু যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকছে। বর্তমানে এ নৌপথে ২০টি ফেরির মধ্যে ১৭টি ফেরি যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। বাকি তিনটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেরামতে রয়েছে।

Source link

Related posts

স্বপদে বহাল চান বিএনপি ও জামায়াতপন্থি কাউন্সিলররা

News Desk

বিদেশি পিস্তল নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা 

News Desk

৮ ইউনিটের চেষ্টায় রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

News Desk

Leave a Comment