প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও (৩১ মার্চ) সকালে গরুকে ঘাস খাওয়াতে ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে গিয়েছিলেন আজগার আলী (৬০)। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকাল, বিকালের সূর্য অস্ত গিয়ে নামে সন্ধ্যা। আজগারের গরু চেনা পথ ধরে নদী পার হয়ে ফিরলেও তিনি বাড়িতে ফেরেননি। শুক্রবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ দল অনুসন্ধান চালালেও খোঁজ মেলেনি আজগারের।
স্বজন ও স্থানীয়দের আশঙ্কা, গরু নিয়ে ফেরার পথে নদীতে নিখোঁজ কিংবা অন্য কোনও অঘটনের শিকার হয়ে থাকতে পারেন আজগার।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজগারের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের নওয়াবশ গ্রামে। নিখোঁজ এই বৃদ্ধের প্রতিবেশি কবীর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ধরলার চরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যার আগে গরুগুলো বাড়িতে ফিরেছে। কিন্তু আজগার ফেরেননি। তার স্ত্রী-সন্তানরা উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। তিনি নদীতে পড়ে গেছেন, নাকি কেউ তার কোনও ক্ষতি করেছে- সেটা নিশ্চিত হতে পারছে না তার পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজ বলেন, ‘নদীতে পানি কম, স্রোতও নেই। গরু পারাপারের সময় ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা কম। অন্য ঘটনা থাকতে পারে।’
এদিকে স্থানীয় এক কৃষকের সঙ্গে আজগার আলীর হাতাহাতির ঘটনার কথাও শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পাঁচগাছী ইউপির ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম সরকার ওয়াসিম বলেন, ‘আজগার আলীর গরু স্থানীয় এক ব্যক্তির জমির ধান খাওয়ায় ওই ব্যক্তি নৌকায় করে গিয়ে আজগারকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছেন। এরপর নদী পার হওয়ার পথে আজগার নদীতে হারিয়ে গেছেন বলে শুনেছি।’
স্থানীয় জেলে নুর হোসেনের বরাত দিয়ে ওই ইউপি সদস্য বলেন, ‘নৌকায় করে মাছ ধরার সময় নুর হোসেন দেখেছেন একজন লোক তিনটি গরু নিয়ে নদী পার হচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পান গরু পার হচ্ছে কিন্ত লোকটি নাই।’
আজগারের খোঁজ না পেয়ে তার স্ত্রী-সন্তানরা কান্নাকাটি করছেন বলে জানান ইউপি সদস্য ওয়াসিম।
ওসি খান মো.শাহরিয়ার বলেন, ‘তার খোঁজে নদী ও আশপাশের চরগুলোতে অনুসন্ধান চলছে। তার সঙ্গে আরও দুই-তিন জন ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। তার স্বজনদের আশঙ্কা বিবেচনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই নারীকে থানায় নেওয়া হয়েছে। আজগারের খোঁজে অনুসন্ধানের পাশাপাশি পুলিশ গুরুত্বের সাথে বিষয়টি তদন্ত করছে।’