দীর্ঘদিন পর কুয়াকাটা সৈকতে বেড়েছে পর্যটক
বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন পর কুয়াকাটা সৈকতে বেড়েছে পর্যটক

দীর্ঘদিন পর কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। শারদীয় দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক বন্ধকে সামনে রেখে চার দিনের সরকারি ছুটিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।

এ বিষয়ে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকলে সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে কুয়াকাটায়। অনেক দিন পরে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। আশা করি, সামনের দিনেও এমন দৃশ্য চোখে পড়বে।’

সরেজমিন দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে আশেপাশের এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে পর্যটকদের হই-হুল্লোড়। কেউ সমুদ্রের বুকে কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ছেন, কেউবা আবার দল বেঁধে সাঁতার কাটছেন। আনন্দ উপভোগের দৃশ্য স্মৃতিপটে ধারণের জন্য কেউ আবার ছবি তুলছেন।

তবে সৈকতের বেহাল দশা দেখে হতাশ আগত পর্যটকরা। তারা বলছেন, এত সুন্দর সৈকতের এমন বিশ্রী অবস্থা! যত্রতত্র পড়ে আছে জিও টিউব আর জিও ব্যাগ। এসবের মাঝে উপভোগ করা যায় না আসল সৌন্দর্য।

এ বিষয়ে পর্যটক হাসান মাহমুদ মিয়াত বলেন, ‘আমি এই প্রথম কুয়াকাটায় বেড়াতে আসলাম। সৈকত আর সাগরের ঢেউ আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। তবে জিওটিউব ও জিও ব্যাপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় সৈকতটি শ্রীহীন হয়ে পড়েছে।’

অন্যদিকে, পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় ব্যস্ততা দেখা গেছে কুয়াকাটার সব রেস্তোরাঁসহ পর্যটননির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। হোটেল-মোটেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের আবাসিক হোটেলে বুকিং ভালো আছে। পর্যটকদের উপস্থিতিতে স্বস্তি ফিরছে। তাদের আশা, এখন থেকে এমন পর্যটকদের আনাগোনা থাকলে তারা সংকট কাটিয়ে উঠবেন শিগগিরই।

এ বিষয়ে বেস্ট সাউদার্ন আবাসিক হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, ‘টানা ছুটিতে আমাদের আবাসিক হোটেল শতভাগ রিজার্ভেশন হয়েছে। অনেকদিন পরেই এমন পর্যটক আসলেন কুয়াকাটায়। আমরা তাদের চাহিদাকে সব সময়ই অগ্রাধিকার দিই।’

পর্যটক আগমনে বেচাবিক্রি বেড়েছে সৈকত লাগোয়া ব্যবসায়ীদের। আগের চেয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে। চা বিক্রেতা সোহেল বলেন, ‘গতকাল থেকে চোখে পড়ার মতো পর্যটক কুয়াকাটায় আসছেন। বিক্রি বাড়ছে। আশা করি ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।’

সৈকতের ক্যামেরাম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গতকাল থেকেই মোটামুটি পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। আজ ভালোই পর্যটক বাড়ছে। আমরা আমাদের সংকট কাটাতে পারবো।’

আচার বিক্রেতা জসিম মুসুল্লি বলেন, ‘পর্যটকরা এখন বেশি কেনাকাটা করেন না। শুধুই ঘুরে-ফিরে চলে যান। তবে আগের চাইতে বিক্রি বাড়ছে।’

সৈকত লাগোয়া খাবার হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. সেলিম বলেন, ‘বিগত দিনে বেচাকেনা খুবই খারাপ ছিল। গতকাল ভালোই বিক্রি হয়েছে। আজ আরও বাড়বে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার (এসপি) আনসার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত। দেশে চলমান অস্থিরতা কেটে যাওয়ার ফলে পর্যটক বাড়ছে কুয়াকাটায়। তাদের নিরাপদ ভ্রমণে যা যা করা দরকার তার সব করা হবে।’

Source link

Related posts

দেবহাটায় দুইজনের বাড়ি লকডাউন ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান

News Desk

শিগগিরই এ বছরের পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব : শিক্ষামন্ত্রী

News Desk

‘দিনের পর দিন সড়কে, চোখে ঘুম নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়’

News Desk

Leave a Comment