ঈদুল আজহায় বাইরের দেশ থেকে কোনও পশু আনার প্রয়োজন নেই বলছেন চাঁদপুরের খামারিরা। কোরবানির জন্য দেশি গরুসহ অন্যান্য পশুর চাহিদা মেটাতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। এবারের ঈদে জেলায় কোরবানির জন্য ৭০ হাজার পশুর চাহিদা থাকলেও শুধু খামারিদের কাছেই মজুত আছে ৩০ হাজার গবাদিপশু। এছাড়া স্থানীয় কৃষক ও গৃহস্থদের পালন করা পশু মিলে প্রায় ৬৮ থেকে ৬৯ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বলছে, কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে এবার বিদেশি পশুর দরকার হবে না।
মে মাসের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় খামারি রয়েছেন দুই হাজার ৬৩৪ জন। এসব খামারে ২৭ হাজার ৯৬১টি গবাদিপশু রয়েছে। এরমধ্যে ষাড় রয়েছে ১২ হাজার ৫৩টি, বলদ পাঁচ হাজার ৭৭৩টি, গাভী তিন হাজার ৩৩৩টি, মহিষ রয়েছে ২২টি। এছাড়া ছাগল ছয় হাজার ১২৯টি, ভেড়া ৫৩৫টি এবং অন্যান্য আরও ১১৬টি পশু প্রস্তুত রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের জেলা ট্রেনিং অফিসার ডা. জুলহাস আহমেদ বলেন, চাঁদপুর জেলায় দুই হাজার ৬৩৪ জন খামারি রয়েছেন। তাদের সবার পাঁচটির বেশি গবাদিপশু রয়েছে। এছাড়া যারা ঈদকে টার্গেট করে ১-২টি গবাদিপশু পালন করেন তাদের কাছে আরও প্রায় ৪২ হাজার গবাদিপশু রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা উপজেলা ভিত্তিক খামারিদের সব সময় সেবা দিয়ে থাকি। কোরবানির জন্য এ বছর জেলায় গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার। আর আমাদের প্রায় ৬৮ থেকে ৬৯ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে।
চাঁদপুর সুইটি ডেইরি ফার্মে কর্মরত শ্রমিক মো. ফারুক ও মো. সোহেল বলেন, আমাদের এখানে প্রায় শতাধিক গবাদিপশু রয়েছে। গরুগুলোকে গম, ভূট্টা, মশুরি, খেসারি, ধান, খইল, রাব, লবন, খের, কাঁচাঘাস খাওয়ানো হয়।
ফার্মটির মালিক ইব্রাহিম খলিল বলেন, করোনাকালে আমরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি। এবার পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো। তবে গরু মোটাতাজা করতে কোনও ওষুধের ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, মে মাসে কোরবানির জন্য প্রস্তুত গবাদিপশুর যে হিসাব আছে, তা আরও বাড়বে। আমাদের কাছে যে হিসাব আছে, সেটি শুধুমাত্র খামারিদের। খামারি ছাড়াও অনেকেই একটা-দুটি করে গরু-ছাগল পালন করেন। সেগুলোও কোরবানির হাটে আসে। এছাড়া পাশের জেলা থেকেও কোরবানির পশুর আমদানি হয়। তাই চাহিদা মতো পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে বলে আশা করি।