দেশের যেখানে এখনও নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন অর্ধেক মজুরি
বাংলাদেশ

দেশের যেখানে এখনও নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন অর্ধেক মজুরি

ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকার ধোবাউড়া উপজেলা। সেখানে কৃষিকাজে শ্রমিক হিসেবে পুরুষদের পাশাপাশি কাজ করছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরাও। পুরুষের সমান পরিশ্রম করেও তারা পাচ্ছেন অর্ধেক মজুরি। এটাই নাকি সেখানকার দীর্ঘদিনের ‘রেওয়াজ’।

ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বাস করছেন বিপুল সংখ্যক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ। তাদের বেশিরভাগই গারো সম্প্রদায়ের। মাতৃতান্ত্রিক এ সম্প্রদায়ে নারীদেরই সংসারের হাল ধরতে দেখা যায়। কিন্তু অনেক দিন ধরেই এখানকার ‘রীতি’— পুরুষের অর্ধেক মজুরিতে কাজ করবে নারী শ্রমিকরা।

দীঘলবাগ এলাকার কৃষি-শ্রমিক রেসিলা রংদী জানান, ‘সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত নারী-পুরুষ একসঙ্গেই ক্ষেতে-খামারে কাজ শুরু করি। একসঙ্গে কাজ শেষ করি। দিন শেষে পুরুষের অর্ধেক মজুরি দেওয়া হয় আমাদের।’

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিনের রেওয়াজ হিসেবে আমাদের অর্ধেক মজুরি দেওয়া হয়। সমান কাজ করেও আমরা নারীরা বঞ্চিত হচ্ছি।

চম্পা রংদী জানান, ‘এখন বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু করেছি। ধান কাটা বাবদ পুরুষদের প্রতিদিন দেওয়া হয় ৫০০-৬০০ টাকা। সেখানে সমান কাজ করেও নারী শ্রমিকদের দিচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা।’

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গারো সম্প্রদায়ের শ্রমজীবী নারীরা অর্ধেক মজুরি পাচ্ছে, এটা আমার জানা নেই। মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের ভেদাভেদ মোটেও উচিত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি মনিরা সুলতানা অনু জানান, ‘এ যুগেও নারী শ্রমিকরা পুরুষের অর্ধেক মজুরি পাবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত এ ব্যাপারে প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

ময়মনসিংহ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন জানান, সমান কাজ করেও নারীরা অর্ধেক মজুরি পাবে এটা খুবই দুঃখজনক। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীদেরকে পুরুষদের সমান মজুরি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমি।

যোগাযোগ করা হলে বেশ ক’জন কৃষি জমির মালিক এ প্রসঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে দক্ষিণ মাইজপাড়ার জমির মালিক কামরুজ্জামান মানিক জানান, ‘জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি গারো সম্প্রদায়ের নারীরা কৃষি শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালায়। তাদের পুরুষের অর্ধেক মজুরি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।’

রেওয়াজের যুক্তি দেখালেও কামরুজ্জামান অবশ্য স্বীকার করেছেন যে সবাইকে সমান মজুরিই দেওয়া উচিত।

Source link

Related posts

‘রেমাল’ আতঙ্ক: সুন্দরবনের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল

News Desk

চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন, তবে চলছে সবই

News Desk

স্টার লাইন ফুড কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে

News Desk

Leave a Comment