হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের দেশে হিন্দু কোনও সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমণ হয় নাই। এই দেশ হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নাই। আমাদের অমুসলিম ভাইয়েরা নিরাপদে থাকবে। আমি সবাইকে আহ্বান করবো, সংখ্যালঘুদের ওপর বা অমুসলিমদের ওপর কোনও আক্রমণ চলবে না। চলতে দেওয়া হবে না।’
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকালে শহরের পৌর মুক্তমঞ্চ ময়দানে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ দিবস উপলক্ষে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ চলবে না, প্রয়োজনে মন্দির পাহারা দেবো। তবে জালিমের বিচার হতে হবে। ইসকনের ইন্ধনে যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়েছে এর বিচার বাংলার মাটিতে হতে হবে। এজন্য ইসকনকে বাংলার মাটিতে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে বলছি, ষড়যন্ত্র চলছে, চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র। বাইরে থেকে ভেতর থেকে। অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড এটা দেশবিরোধী একটা চক্রান্ত। এই মুহূর্তে আমি উদাত্ত আহ্বান জানাবো, আমরা শান্ত থাকবো। ধৈর্যের সঙ্গে আমরা পরিস্থিতির মোকাবিলা করবো। এই পরিস্থিতিতে আমরা দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ থাকবো। যেকোনও আগ্রাসনকে আমরা রুখে দেবো। পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা আলেম এবং ছাত্র-জনতা দেশবাসী যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি কোনও শক্তি বাংলাদেশের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। আমরা রক্ত দিয়েছি রক্ত দিতে জানি আরও রক্ত দেবো। দেশবিরোধী কোন ষড়যন্ত্র সহ্য করবো না।’
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুত্ববাদী ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনোদিন মেনে নিতে পারেনি। তারা দেখতে পাচ্ছে, মহান জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। হাসিনার ফ্যাসিবাদের পতনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টদেরও বাংলাদেশের পরাজয় শুরু করেছে। এটা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই ৫ আগস্টের পর থেকে তার নানারকম ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা বর্তমানে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সেটা আপনারা অবহিত আছেন, তারা সংখ্যালঘু কার্ড খেলার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ সত্য কথা হলো, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা বিশ্বের যেকোনও দেশের তুলনায় অধিক নিরাপদে আছে। অধিক সম্মানের সঙ্গে আছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে হিন্দু নাগরিকরা বলতে গেলে একধরনের কমান্ডিং পজিশনে আছে। মুসলমানদের পরে তারা অধিকতর সুবিধাভোগী হিসেবে দিনযাপন করছে। তারপরেও এই মাইনরিটি কার্ড খেলা হচ্ছে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা মুফতি মোবারকুল্লাহ। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ইসলামি চিন্তাবিদ, কবি-সাহিত্যিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।