রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ নেই। তবে চাপ রয়েছে যানবাহনের। ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত চার কিলোমিটার পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে এক কিলোমিটারে যাত্রীবাহী বাস।
ফেরির নাগাল পেতে ট্রাক চালকদের সময় লাগছে ৮-১০ ঘণ্টা। এছাড়া যাত্রীবাহী যানবাহনের যাত্রীদেরও ৪-৫ ঘণ্টা সিরিয়ালে অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেতে হচ্ছে।
শুক্রবার (১৩ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘাটে অবস্থান করে এ চিত্র দেখা গেছে। এদিকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি রয়েছে।
এদিকে সড়কের খোলা আকাশের নিচে থেকে খাবার, গোসল ও টয়লেট সমস্যায় পড়ছেন ট্রাকচালক ও সহকারীরা। সময় মতো মালামাল পরিবহন করতে না পেরে বেড়ে যাচ্ছে পরিবহন খরচের পাশাপাশি চালকদের ব্যক্তিগত খরচও। ভোগান্তি কমাতে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ যাত্রীবাহী যানবাহন ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করলেও, অপচনশীল ট্রাকগুলোকে দীর্ঘক্ষণ সড়কে ফেরী পারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
বেনাপোল থেকে পাইপবোঝাই ট্রাক নিয়ে আসা চট্টগ্রামগামী চালক কাজল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টায় গোয়ালন্দ মোড়ে এসে আটকা পড়ি। ভোরে ওখান থেকে ছেড়ে এসে আবারও ঘাটে এসে আটকা পড়েছি। গরমে আর ভালো লাগছে না। সিরিয়ালে থেকে আমাদের বাজে মালের ট্রাকগুলো কম ছাড়ছে। পরিবহন ও কাঁচামালের গাড়িগুলো বেশি টানছে। মনে হচ্ছে নদী পার হতে আরও ৪-৫ ঘণ্টা লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে ঘাটে থেকে খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং মহাজনের কাছে ঋণী হয়ে যাচ্ছি। ঠিকমতো গোসল-টয়লেট, খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছি না।’
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, ঈদ শেষে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহনের চাপে সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। যাত্রীবাহী যানবাহন ও ছোট গাড়ি পারাপার চলমান রয়েছে। কয়েকশ’ পণ্যবাহী ট্রাক সিরিয়ালে রয়েছে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন ও পচনশীল পন্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। বর্তমানে এ নৌপথে ছোট-বড় ২০টি ফেরি চলাচল করছে।