রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে লঞ্চঘাটে তেমন চাপ দেখা যায়নি।
সরেজমিন ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ঘাটে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চ। যেখানে পদ্মা সেতু চালুর আগে ২০-৩০ মিনিট পর পর লঞ্চগুলো শতাধিক যাত্রী নিয়ে নদী পার হতো, সেখানে যাত্রীর সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে। পাটুরিয়া ঘাট থেকে আসা লঞ্চগুলোতেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দৌলতদিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার আগেও যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল। তিন দিন ধরে ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনসহ হালকা যানবাহনের চাপ কমেছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
কুষ্টিয়া থেকে লঞ্চঘাটে আসা সাভারগামী যাত্রী ফরহাদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়াতে মহাসড়ক ও ঘাটে তেমন চাপ চোখে পড়েনি। আমি কুষ্টিয়া থেকে লোকাল বাসে এক ঘণ্টার মধ্যে ঘাটে এসেছি। ২০ মিনিট ধরে বসে আছি, এখনও যাত্রীর জন্য লঞ্চ ছাড়ছে না। আমিসহ ২৫-৩০ জনের মতো যাত্রী রয়েছে।’
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে থাকা মেসার্স আল আমিন শিপিং লাইন্সের চালক মো. আরশাদ শেখ বলেন, ‘আজ সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে এক ট্রিপে ৪০ জন যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়েছিলাম। আবার পাটুরিয়া থেকে ৩৫ জনের মতো যাত্রী নিয়ে ঘাটে এসেছি। যেখানে আগে দিনে পাঁচ-ছয় ট্রিপ হতো। সেখানে এখন দিনে দুই-তিন ট্রিপ হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে ঘাটে যাত্রী কমেছে।’
এমভি টুম্পার চালক ঠান্ডু মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর ঘাটে এতো যাত্রী কমে যাবে ভাবতেও পারিনি। প্রায় ১৫ বছর ধরে এ নৌপথে লঞ্চ চালাই। ঘাটে এমন দৃশ্য কখনও দেখিনি। কিছু করার নেই, এভাবেই চলতে হবে।’
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আলম মিলন বলেন, ‘যাত্রীশূন্য হয়ে গেছে লঞ্চঘাট। দূরপাল্লার পরিবহনসহ লোকাল যাত্রী না আসায় প্রতিটি লঞ্চ ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চগুলো চলাচল করছে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন বলেন, ‘দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাত্রী অনেক কম। আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ চলাচলে সহযোগিতা করছি।’