বরিশালে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের স্টোররুমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেয়ে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। এ সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় বেশ কজন সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধোঁয়া সরাতে স্মোক ইজেক্টর যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার অভিযানে আগুন এবং ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
এদিকে, আগামী তিন দিনের মধ্যে মেডিসিন বিভাগ সচল করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।
ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্টোররুমে তুলা, গজ, ফোম থাকায় আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা না গেলেও ধোঁয়ার প্রকোপ ছিল অত্যধিক। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের অক্সিজেনের সংকটের কারণে আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। কিছু সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তারা বাইরে এসে আবার সুস্থ হয়ে কাজে ফিরে যান। ধোঁয়ার কারণে কাজে মারাত্মকভাবে সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে স্মোক ইজেক্টর এনে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে একযোগে ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণকাজে যোগ দেয়। কিন্তু ধোঁয়ার কারণে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল। এ কারণে ভেতরে না গিয়ে স্টোররুমের বাইরে থেকে জানালা ভেঙে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সাড়ে ১১টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়াও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তিন ঘণ্টার মধ্যে আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এখন মেডিসিন বিভাগে কোনও সমস্যা নেই।’
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তবে কোথা থেকে কীভাবে আগুন লেগেছে, এজন্য তদন্ত করা প্রয়োজন। তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। তুলাজাতীয় মালামাল থাকায় আগুন লাগলেও কেউ টের পায়নি। পরে তা বড় আকার ধারণ করে ধোঁয়ায় পুরো ভবন আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে আগুন লাগার বিষয়টি ধরা পড়ে।’
দুপুরে বিভিন্ন ফ্লোর পরিদর্শন শেষে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রেজাউল আলম রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রোগীর বেড, ম্যাট্রেস, তুলাসহ বিভিন্ন সামগ্রী নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের আগুন নিয়ন্ত্রণের কারণে ফ্লোরে পানিসহ বিভিন্ন কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে কক্ষগুলো ঠিক করে রোগীদের ওয়ার্ডে আনতে কমপক্ষে তিন দিনের সময়ের প্রয়োজন। এজন্য গণপূর্তের প্রকৌশলীর সঙ্গেও কথা হয়েছে।’
জানা গেছে, মেডিসিন বিভাগের পাঁচটি ওয়ার্ডের ১০টি ইউনিটে ৭০ জন ডেঙ্গুরোগীসহ ৫৪৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এ ছাড়া রোগীদের স্বজন, নার্স, চিকিৎসক, স্টাফরাও সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুন:
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে আগুন, রোগী ও স্বজনদের ছোটাছুটি