নাবিক ও জাহাজ অক্ষত উদ্ধারের চেষ্টা করছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ

নাবিক ও জাহাজ অক্ষত উদ্ধারের চেষ্টা করছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গতবার যখন এমভি জাহান মণি হাইজ্যাক হয়েছিল তাদের মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এখন যত দ্রুত সম্ভব তাদের (জিম্মি) মুক্ত করার চেষ্টাই আমরা করছি। ওখানে অবস্থানকারী নাবিক এবং জাহাজের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেভাবেই আমরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।’

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে। কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ। সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি। যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে তারা ইতোমধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করছে। আপনারা নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও জানতে পারবেন তারাও অনেকটা আশ্বস্ত। আশা করছি, আমরা সহসা নাবিকদের উদ্ধার করতে পারবো।’

‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ নিয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ খাবেন। আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন। আপনাদের নেত্রী যেগুলো মাঠে গলা ফাটায় তারাও আবার ভারতীয় শাড়ি পরবেন। ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে ইফতার করবেন, সেহরি খাবেন। কদিন আগে ওদের (বিএনপি) নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেবেন এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে নিত্যপণ্য মূল্য বাড়ানো।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে তাদের সঙ্গে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছেন। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সঙ্গে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। আসলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য। এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে সেটাই তারা চায়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জেনে খুশি হবেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য ইতোমধ্যে পাঁচশ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনা মূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরও তিনশ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে। সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। ইতোমধ্যেই ডিপি ওর্য়াল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটা বড় অগ্রগতি।’

জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Source link

Related posts

এমপি আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধারের খবরে এলাকায় কান্নার রোল

News Desk

পরিস্থিতি বুঝে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

News Desk

দিন-দুপুরে জেলের চাল লুটপাট-আত্মসাৎ

News Desk

Leave a Comment