কুড়িগ্রাম শহরের আরডিআরএস নামক এনজিও’র পেছনের পুকুর থেকে মাহমুদ উল ফেরদৌস মামুন (২৮) নামে এক প্রকৌশলীর (বিএসসি) ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের এক কনস্টেবলকে ‘আটক’ করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। তবে পুলিশ বলছে, তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
রাজারহাট থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান তিন জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পুলিশ কনস্টেবল আটকের বিষয়টি স্বীকার করেননি।
নিহত মাহমুদ উল মামুন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের ছবরুল হকের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। গত ৯ অক্টোবর তিনি নিখোঁজ হন। পরে সন্ধান চেয়ে তার বাবা রাজারহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের শিকার নাকি অন্য কোনোভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল রানা (২২), মমিনুল ইসলাম (১৯) এবং ফেরদৌস প্রান্ত (১৯)। তাদের বিরুদ্ধে মাদকাসক্তির অভিযোগ রয়েছে। রবিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসের এক কনস্টেবলকে আটক করা হলেও তা স্বীকার করেনি পুলিশ। গ্রেফতার সোহেল রানা কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। মমিনুল ইসলাম হাসপাতাল পাড়ার রবিউল ইসলাম রবির ছেলে এবং ফেরদৌস প্রান্ত একই এলাকার মশিউর রহমানের ছেলে। তবে প্রান্ত বর্তমানে রংপুরের পার্কেরমোড় সরদার পাড়ায় বসবাস করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৯ অক্টোবর নিখোঁজের পর ওইদিন সন্ধ্যায় নিহত মামুন তার বড় ভাই রতনকে মোবাইল ফোনে জানান, কয়েকজন তাকে আটকে রেখে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছে। কিন্তু তার বড় ভাই ব্যস্ত থাকায় সময়মতো টাকা দিতে না পারায় পরে যোগাযোগ করে মোবাইল ফোন বন্ধ পান। জিডির সূত্র ধরে রবিবার রাতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। পরে মামলার ভিত্তিতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর মধ্যে সোমবার বিকালে নিখোঁজ প্রকৌশলী মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর পরপরই পুলিশ লাইনসের এক কনস্টেবলকে আটক করা হয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘আমরা তিন জনকে গ্রেফতার করেছি। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘তাৎপর্যপূর্ণ প্রমাণের ভিত্তিতে তিন তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে মামলা তদন্ত করছি।’
পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার প্রশ্নে এসপি বলেন, ‘বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। এ ঘটনায় যারই জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।’